পাস্ ক্লাব বধের সেই দিনটা

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

অরিজিৎ সিং এর গান টা মনে আছে তো “ ইতিহাস সাক্ষী হলো…….”, সেই ইতিহাসের গল্পটা আজ বলবো।

সালটা ১৯৭০, ১২ ক্লাসে পড়ি। ছোটবেলা থেকে অন্ধ ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক। স্কুল থেকেই মাঠে যাওয়া। আমাদের বাড়ির সবাই ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক। এমনও দিন গেছে যে পুলিশের লাঠি ছাড়া কেউ বাড়ি ফিরেছে।

যাই হউক, এবার আসি আসল স্মরণীয় ঘটনাতে যেটা আমি কোনদিন ভুলতে পারবোনা। ২৫এ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০, ইডেনগার্ডেন, IFA Shiled এর ফাইনাল, আমাদের ক্লাব আর ইরানের PAS, ক্লাব। সেই সময় তাবড় তাবড় খেলোয়াড়দের  নিয়ে এই PAS ক্লাব টীম, সবাই আন্তর্জাতিক মানের প্লেয়ার।

ইস্টবেঙ্গল মাঠে যেতাম কিন্তু ইডেনগার্ডেন এ গিয়ে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়, ৮৫০০০ দর্শক, ভাবা যায়? যেদিকে তাকাই শুধু লালহলুদ। মনটা আমার ভরে গেলো, আমি ভাবলাম এত সমর্থক? এবার আসি টীমের কথায় , শান্ত মিত্র, সুভাষ ভৌমিক, সুরজিৎ সেনগুপ্ত, শ্যাম থাপা, সুধীর কর্মারকার কে নেই এই টীমে, সব বাঘা বাঘা প্লেয়ার আর সঙ্গে আছেন আমাদের প্রদীপ দা যিনি সব সময় “ভোকাল টনিক” নামে পরিচিত।

খেলা শুরু হলো, বুকের মধ্যে ট্রাম্পেট বাজছে, কি জানি কি হয়। গোলের দেখা নেই, মিস পাস যে হচ্ছে না তা নয়ে, কিন্তু চোখ ধাঁধানো খেলা, বল একবার ইস্টবেঙ্গলের পেনাল্টি বক্সে, তো আবার পাস ক্লাবের পেনাল্টি বক্সে আর তার সঙ্গে সমর্থকদের গগনভেদি গর্জন। একএক করে সময় কেটে যাচ্ছে কিন্তু গোলের দেখা নেই। হাফ টাইম, দীর্ঘ নিঃশ্বাস, কি হবে কে জানে? দেখতে দেখতে খেলা প্রায় শেষের দিকে, ইনজুরি টাইম দেওয়া হলো ৪ মিনিট, প্রদীপ দার শেষ কামড়, পরিমল দে কে নামালেন পরিবর্ত প্লেয়ার হিসাবে। ব্যাস, এতেই কেল্লাফতে। সেটপিস থেকে অসাধারণ গোল, গো…ও……ল, কানফাটা আওয়াজ।

খেলা শেষ, প্রদীপ দা সবাই কে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। কি যে আনন্দ হয়েছিলো আমার বুকে, সেটা আজও মনের মধ্যে গানের মত বাজে। এবার বাড়ি যাওয়ার পালা, বাস, ট্রাম এ উঠবো কি? জনঅরণ্য, অতএব চলো হেঁটে, ৪ কিলোমিটার, কোনো ব্যাপার না, রক্তে তো লাল হলুদ।

League Table

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.