কুমিল্লা নামকরণের অনেকগুলো প্রচলিত মত রয়েছে। চৈনিক পরিব্রাজক ওয়াং চোয়াঙ কর্তৃক সমতট রাজ্য পরিভ্রমণের বৃত্তান্ত থেকে জানা যায়ঃ খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে গুপ্ত সম্রাটদের অধিকারভুক্ত ত্রিপুরায়, কিয়া-মল-ঙ্কিয়া নামক যে স্থানের বিবরণ রয়েছে সেটি থেকেই কমলাঙ্ক বা কুমিল্লার নামকরণ করা হয়েছে। অন্য কিংবদন্তি অনুসারে কুমিল্ল নামক একজন শাসকের নামানুসারে এ এলাকার নাম কুমিল্লা হয়। দ্রুপিয়ান কলিংস একদা কামালঙ্ক নামে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই হেতুতে ধারণা হলো এই কামালঙ্ক থেকেই কুমিল্লা নামটির উৎপত্তি হয়ে থাকবে। আরো একটি উপকথার মাধ্যমে জানা যায়, এ অঞ্চলে টিপরা (পরে উচ্চারণ পরম্পরায় ত্রিপুরা হয়) রাজার স্ত্রীর নাম ছিল কমলা। কুমিল্লা শব্দটি উৎপত্তির মূল বা মা-শব্দ এই ‘কমলা’। এমনও লোককথা আছে যে, জনৈক করিমুল্লা নামে এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি তৎকালের এই পাড়াগ্রাম-এ বাস করতেন। ধারণা করা হয় তিনি তার নামানুসারে উক্ত পাড়াগ্রামের নামকরণ করেন কুমিল্লা। বর্তমান কুমিল্লা চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন একটি জেলা। প্রাচীনকালে এটি সমতট জনপদের অন্তর্গত ছিল এবং পরবর্তীতে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ হয়েছিল। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শনাদি থেকে যতদূর জানা যায় খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দী থেকে ত্রিপুরা গুপ্ত সম্রাটদের অধিকারভুক্ত ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে সপ্তম থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এ অঞ্চলে বৌদ্ধ দেববংশ রাজত্ব করে। নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা হরিকেলের রাজাগণের শাসনাধীনে আসে। প্রত্নপ্রমাণ হতে পাওয়া যায় যে, দশম হতে একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ বছর এ অঞ্চল চন্দ্র রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছে। মধ্যবর্তী সময়ে মোঘলদের দ্বারা শাসিত হওয়ার পরে ১৭৬৫ সালে এটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে আসে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে কোম্পানী ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দ প্রদেশে একজন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে। তখন কুমিল্লা ঢাকা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে কুমিল্লাকে কালেক্টরের অধীন করা হয়। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা গঠনের মাধ্যমে ত্রিপুরা কালেক্টরেটের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরবর্তী সময়ে ১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ করা হয় কুমিল্লা। কুমিল্লার প্রধান নদীগুলোর মধ্যে মেঘনা, গোমতী, তিতাস, ডাকাতিয়া, কাঁকড়ি, আড়চি, ঘুংঘুর এবং সালদা নদী উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে উপমহাদেশে সুপরিচিত। শিক্ষা বিস্তারে প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক-বাহক কুমিল্লা। কুমিল্লায় বহু মনীষী জন্মগ্রহণ করেছেন যারা বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। মহাস্থবির শীলভদ্র ৫২৯ সালে সমতট রাজ্যভুক্ত বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্গত কুমিল্লা জেলার চান্দিনার কৈলাইন গ্রামে এক ব্রাহ্মন রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাচীন ভারতে বর্তমান বিহার প্রদেশে অবস্থিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান আচার্য পদে শীলভদ্র ২০ বছরের বেশি দায়িত্ব পালন করেন। তিতাস একটি নদীর নাম রচয়িতা বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ ১৯১৪ সালে বাঙালি তৎকালীন কুমিল্লা জেলার অধীনে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমার গোকর্ণঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিপ্লবী উল্লাস কর দত্ত ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ১৬ এপ্রিল কালিকচ্ছ বাঘবাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম এর নিকটাত্মীয় ছিলেন। প্রখ্যাত কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, গল্পকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও সাহিত্য-সমালোচক বুদ্ধদেব বসুর জন্ম ১৯০৮ সালে কুমিল্লা তে। সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে কুমিল্লার অবদানও অনস্বীকার্য। সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান, ওস্তাদ আয়েত আলী খান, ওস্তাদ আকবর আলী খান প্রমুখ ভুবন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লা। কুমিল্লার ওস্তাদ আফতাবউদ্দিন খান সরোদের মত দেখতে সুর সংগ্রহ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এছাড়াও তিনি মেঘ ডাবুর যন্ত্র নামে সুরযন্ত্রের স্রষ্টা। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান চন্দ্র সারং এবং ওস্তাদ আয়েত আলি খান আধুনিক সরোদ উদ্ভাবন করেন। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান সৃষ্ট রাগ সঙ্গীত, হেমমত্ম দুর্গেশ্বরী, মেঘ বাহার, প্রভাতকেলী, হেম বেহাগ, মদন মঞ্জরী রাগ এবং ওস্তাদ আয়েত আলী খান সৃষ্ট মিশ্র রাগ উপ মহাদেশের শাস্ত্রীয় গীতধারায় এখনও প্রবল প্রভাব রেখে চলেছে। ওস্তাদ আলী আকবর খান ১০টি নুতন রাগ সৃষ্টি করেন। এগুলো হলো রাগ চন্দ্রনন্দন, গুরুমঞ্জরী, লাজবন্তি, মিশ্র শিবরঞ্জনী, ভুপমন্দ, মেধাবী, আলমগীরি, মলয়ালম স্মৃতি, কুশিযোগি এবং রাগ চৌরাঙ্গ কল্যাণ। শচীন দেব বর্মণ শুধু একজন সঙ্গীতজ্ঞ নন, উপমহাদেশের সম্পদ। শচীন কর্তার জন্ম কুমিল্লায়৷ তবে আদিবাস বর্তমান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে৷ তিনি ছিলেন ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের সন্তান।
কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী অতীতের সাক্ষ্য বহন করছে এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনসমূহ। এ জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বহু মূল্যবান পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক স্থানের সন্ধান পাওয়া গেছে। তেমনি এক ঐতিহাসিক স্থানের সন্ধান পাওয়া যায় লালমাই ময়নামতি পাহাড়ের ধ্বংসাবশেষ থেকে। এখানকার মাটি খুঁড়ে প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন খুজেঁ পাওয়া গেছে। এ পাহাড়ের পুরাকীর্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক শালবন বিহার, প্রত্মতাত্ত্বিক খননে এ প্রত্মকেন্দ্রে ৬টি নির্মাণ যুগের সন্ধান পাওয়া যায় এবং ১ম নির্মাণ যুগ ৬ষ্ঠ শতক এবং শেষ নির্মাণ যুগ ১২শ শতক বলে প্রত্মতাত্ত্বিকগন মনে করেন। বিহারের ৪টি বাহুতে সর্বমোট ১১৫ টি ভিক্ষু কক্ষ ছাড়াও বিহারাঙ্গনে রয়েছে ক্রুশাকার কেন্দ্রিয় মন্দির। এটিকে শেষ নির্মাণ যুগে আয়তাকার মন্দিরে রুপান্তর করা হয়। মন্দিরের দেয়াল পোড়ামাটির ফলক চিত্র দ্বারা অলংকৃত ছিল। রূপবান মুড়া খননে প্রাপ্ত স্থাপত্য নিদর্শন ও প্রত্ম সম্পদ বিশ্লেষণে এই প্রত্মকেন্দ্রের সময়কাল পন্ডিতগণ খ্রী. ৭ম থেকে ১২শ শতাব্দী বলে অনুমান করেন। মন্দিরের পূর্ব পার্শ্বস্থ প্রকৌষ্ঠ থেকে বেলে পাথরের অভয় মুদ্রায় দন্ডায়মান বৃহদাকার ১ টি বৌদ্ধ মূর্তি পাওয়া যায়। রুপবান মুড়া প্রত্মকেন্দ্রের উত্তর পাশে অবস্থিত আরও ১ টি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ প্রত্মকেন্দ্র স্থানীয়ভাবে ইটাখোলা মুড়া নামে পরিচিত। ১টি আয়তাকার মন্দির এবং বেশ কয়েকটি স্তুপের সন্ধান পাওয়া গেছে। উন্মোচিত মন্দিরটিতে মোট ৫টি নির্মাণ যুগের নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। আনন্দ বিহার আয়তনে শালবন বিহার থেকে অনেক বড়। বিহারের মধ্যবর্তী স্থানে ক্রুশাকার কেন্দ্রীয় মন্দির উম্মোচিত হয়েছে। খননের ফলে এখানে বৃহদাকার একটি ব্রোঞ্জের মূর্তিসহ বিভিন্ন ধরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্ত্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। কোটিলা মুড়ার সময়কালকে খ্রিষ্টিয় সাত-তের শতক বলে অনুমান করা হয়। খননের ফলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা ৩টি স্তূপের নির্দশন উন্মোচিত হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মের ত্রি-রত্ন (বৌদ্ধ,ধর্ম ও সংঘ) ৩টি স্তূপ বাংলাদেশে আর কোথায়ও পাওয়া যায়নি। চারপত্র মুড়া স্থাপত্য শৈলী অনুযায়ী এর সময়কালকে খ্রিঃ এগার-বার শতকে মনে করা যায়। এখানে ছোট আকৃতির মন্দিরের ধবংসাবশেষ উন্মোচিত হয়েছে এবং তিনটি নির্মাণ যুগের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।
রাণী ময়নামতি প্রাসাদ ও মন্দির স্থাপত্য বৈশিষ্ট ও প্রত্নসম্পদের বিশ্লেষণে এটিকে ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর প্রাচীন কীর্তি বলে অনুমিত হয়। ভোজ রাজার বাড়ি কুমিল্লা শহর হতে ৮ কিমি. পশ্চিমে কোটবাড়ী-টিপরা বাজার ক্যান্টনমেন্ট সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। আবিষ্কৃত স্থাপত্য কাঠামো এবং প্রত্মসম্পদের বিবেচনায় এ নিদর্শনটির সময়কাল ৮ম হতে ১২শ শতাব্দী নিরুপন করা যেতে পারে। রাণীর কুঠি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী ধর্মসাগরের উত্তর পারে ছোটরা মৌজায় অবস্থিত। এটি তদানিন্তন মহারাজা মানিক্য কিশোর বাহাদুরের স্ত্রী বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়। শতাধিক বছরের পুরাতন এই বাড়িটির নাম ‘‘রাণীর কুঠি’’ হিসেবে তদানিন্তন ত্রিপুরা রাজ্য সহ বাংলাদেশের সকল জেলায় সর্ব সাধারনের নিকট পরিচিত। কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে জগন্নাথপুর গ্রামে সতর রত্ন মন্দির অবস্থিত। ত্রিপুরার মহারাজা দ্বিতীয় রত্ন মানিক্য ১৭ শতকে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং ১৮ শতকে মহারাজা কৃষ্ণ মানিক্য সমাপ্ত করেন। এসব বিহার, মুড়া ও প্রাসাদ থেকে খুঁজে পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সামগ্রী ময়নামতি জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র বাদুরতলা এলাকায় ধর্মসাগর দিঘিটির অবস্থান। ত্রিপুরার অধিপতি মহারাজা প্রথম ধর্মমাণিক্য ১৪৫৮ সালে এই দিঘিটি খনন করেন। ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এই দিঘির নাম রাখা হয় ধর্মসাগর। কবি কাজী নজরুল ও তাঁর স্ত্রী নার্গিসের স্মৃতি বিজড়িত স্থান কবি তীর্থ দৌলতপুর। ১৯২১ সালে নজরুল কুমিল্লার দৌলতপুরে আসেন, এখানে বসেই ১৬০টি গান ও ১২০টি কবিতা রচনা করেন। কবি আলী আকবর খানের বোনের মেয়ে সৈয়দা নার্গিস আরা খানমকে বিয়ে করেন। কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী শাহসুজা মসজিদ মুঘল স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন। ১৬৫৮ সালে এ মসজিদটি নির্মিত হয়। বাদশাহ আওরঙ্গজেবের ভাই শাহজাদা সুজার নাম অনুসারে এ মসজিদ নামকরণ করা হয়। কুমিল্লার মোগলটুলীতে এর অবস্থান। জগন্নাথ মন্দির, এটি সতেরো রত্ন মন্দির নামেও পরিচিত। টেরাকোটা মন্দিরটির ইটভাটা মন্দিরের স্থাপত্যের সাধারণ শৈলী। মন্দিরটির ১ম তলায় ৮টি, ২য় তলায় ৮টি এবং কেন্দ্রে আরও ১টি রত্ম নিয়ে মোট ১৭টি রত্ন ছিল। মহারাজা ২য় রত্নমাণিক্যর নিমার্ণ কাজ শুরু করলেও শেষ করেন মহারাজা কৃষ্ণকিশোর মাণিক্য।
দুধ, ছানা ও চিনির সমন্বয়ে তৈরি কুমিল্লার রসমালাই সারাদেশে এক নামে পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকে এই উপ-মহাদেশে হস্তচালিত তাঁত শিল্প ছিল জগদ্বিখ্যাত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সব সময় এই তাঁতের কাপড় বিদেশেও রপ্তানি হতো। একটি পেশাজীবী সম্প্রদায় তাঁত শিল্পের সাথে তখন জড়িত ছিলেন। তাদেরকে স্থানীয় ভাষায় বলা হতো ‘যুগী’ বা ‘দেবনাথ’। বৃটিশ ভারতে গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের সময়কালে ঐতিহাসিক কারণে এ অঞ্চলে খাদি শিল্প দ্রুত বিস্তার লাভ ও জনপ্রিয়তা অর্জন করে। গান্ধীজী প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার অভয় আশ্রম খাদি শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কুমিল্লার হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামের বাঁশিপাড়ার বাঁশি, দেশ-বিদেশে রপ্তানি হয় সগৌরবে। এছাড়াও কুটির শিল্প, বিজয়পুরের মৃৎশিল্প, কারু শিল্প, ময়নামতির শীতল পাটি ইত্যাদি স্ব-স্ব ঐতিহ্যে স্বকীয়তা আজও বজায় রেখেছে।