জয়ের স্বাদ পাওয়া ইস্টবেঙ্গল আর পিছনে ফিরে তাকাতে নারাজ

east bengal vs goa

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

ও বেটা জী, আরে ও বাবুজী

কিসমত কি হাওয়া কভি নরম কভি গরম

কভি নরম নরম কভি গরম গরম

কভি নরম গরম নরম গরম

১৯৫১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলবেলা সিনেমাতে ভগবান দাদার উপর চিত্রায়িত এই গান হঠাৎই ২০২০ সালে শিরোনামে উঠে আসে, অনুরাগ বাসু পরিচালিত নেটফ্লিক্স মুভি লুডোর হাত ধরে। কিন্তু আচমকা এই গানের প্রসঙ্গ কেন? আসলে প্রথম তিন ম্যাচে হারের মুখ দেখা আইএসএলে নবাগত এসসি ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স মোটেও আশাব্যঞ্জক ছিলো না। সেই তিন ম্যাচে সাতখানা গোলও হজম করতে হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা, গোলের খাতাও ততদিনে খুলতে পারেনি এসসি ইস্টবেঙ্গল।

এসসি ইস্টবেঙ্গল:

কিন্তু কিসমতের হাওয়া ঘুরতে শুরু করেছে হায়দ্রাবাদ এফসি ম্যাচ থেকেই। ওই ম্যাচে ২-৩ ব্যবধানে হেরে গেলেও আইএসএলে প্রথমবারের জন্য গোলমুখ খুলতে সক্ষম হয় রবি ফাউলারের ছেলেরা। গত চার ম্যাচে মাঘোমা, স্টেইনম্যান, পিলকিংটন, নবাগত ব্রাইটরা করেছেন ৮টি গোল, যা কিনা শেষ চার ম্যাচে করা প্রতিটা দলের গোলসংখ্যার মধ্যে সর্বোচ্চ।

এই তথ্যতেও যদি উৎসাহিতবোধ না করেন লাল হলুদ সমর্থকরা, তাহলে তাঁদের চার্জড আপ অবশ্যই করবে গত ওড়িশা এফসি ম্যাচের শেষ ১৭ মিনিটে ঘটে যাওয়া এক নাইজেরীয় তরুণের অভিষেক।

ব্রাইট এনোবাখারে। হয়তো সবে মিনিট কুড়ি খেলেছেন, কিন্তু ঐ যে কথায় আছে না, মর্নিং শোজ দ্য ডে। ঠিক যেন এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। ফার্স্ট টাচ, রিসিভিং, টার্নিং অনবদ্য, হেলায় ২-৩ জনকে কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন। তবে সবচেয়ে বড়ো গুণ, শুধু বক্সের আশেপাশে ঘোরাই নয়, রীতিমত সেন্টার লাইনে নেমে এসে বল তৈরী করতে পারেন। ৮৮ মিনিটে নিখুঁত প্লেসমেন্টে বল জালে জড়িয়ে প্রথম কয়েকটা ম্যাচে গোলখরায় ভোগা ইস্টবেঙ্গল শিবিরকে যেন আশ্বস্ত করলেন – “কিসকা হ্যায় ইয়ে তুমকো ইন্তেজার ম্যায় হুঁ না”। ইস্টবেঙ্গলে এর আগেও অনেক নাইজেরিয়ান নিজেদের জাত চিনিয়ে গেছেন। ইস্টবেঙ্গল জনতার আড্ডায় বারেবারেই উঠে আসে উগা ওপারা, পেন ওরজি, রন্টি মার্টিন্স, ডুডু ওমাগবেমিদের নাম। ব্রাইট কি পারবেন তাঁর পূর্বসূরিদের ছাপিয়ে যেতে? সময় বলবে।

ব্রাইট এসে যাওয়াতে আক্রমণভাগ নিয়ে নিঃসন্দেহে অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন কোচ রবি ফাউলার। তবে তাঁকে এখনও চিন্তায় রাখবে দলের ডিফেন্স। গত ম্যাচে ব্লকার হিসেবে নামা মিলন সিং একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। ফিটনেসের ধারেকাছে নেই তিনি, যা কিনা একজন প্রফেশনাল ফুটবলারের থেকে অনভিপ্রেত। শেহনাজ তবু মন্দের ভালো। ইস্টবেঙ্গল বক্সের বাইরে অনেকটাই ফাঁকা জায়গা পেয়ে যাচ্ছে বিপক্ষ। ওড়িশা এফসির গত ম্যাচে ২৩টি শট নেওয়াই তার প্রমাণ। দেবজিৎ মজুমদার বরাবরের মতো ভালো সেভ দিলেও তিন গোলে জেতা ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গা-ছাড়া মনোভাব এসে যাওয়ায় গোল হজম করতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে। একটা করে শট বার এবং পোস্টে লেগেও ফিরেছিল। সব মিলিয়ে ডিফেন্স কিন্তু এখনো ভরসা জোগাতে পারছে না ইস্টবেঙ্গল জনতাকে।

ছয় বছর পরে এসসি ইস্টবেঙ্গলে রাজু গায়কোয়াড়ের প্রত্যাবর্তন কিন্তু ভালোই হয়েছে। সেই বিখ্যাত লম্বা থ্রো থেকেই পিলকিংটন হেডে প্রথম গোলটি করেন। তবে রাজুরও ম্যাচফিট হতে কিছুটা সময় লাগবে। অভিষেকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন নবাগত অঙ্কিত মুখার্জিও। বলা বাহুল্য, কোচ রবি ফাউলারের কাছে ডিফেন্সিভ অপশন কিছুটা হলেও বেড়েছে। এফসি গোয়া ম্যাচে ডিফেন্স ভরসা দিলে ফর্মে থাকা আপফ্রন্টের পক্ষে ম্যাচ বের করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।

এফসি গোয়া:

৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের তিন নম্বরে আছে হুয়ান ফ্রান্দোর দল। স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ইগর আঙ্গুলো ইতিমধ্যেই ৯ ম্যাচে ৯টি গোল করে ফেলছেন। তাঁকে রোখাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ড্যানি ফক্স, স্কট নেভিলদের সামনে। নিজের প্রথম ম্যাচেই গোল করে জাত চিনিয়েছেন অনাবাসী ভারতীয় ঈশান পন্ডিতা। মাঝমাঠে প্রতিদিনই ভরসা জোগাচ্ছেন আরেক স্পেনীয় আলবার্তো নগুয়েরা। তবে গোয়ার মাঝমাঠের প্রাণভোমরা এডু বেডিয়া। বক্সের আশপাশ থেকে বিষাক্ত ফ্রিকিক, কর্নার নিতে পটু। মাঝমাঠের খেলাটাও তৈরী করেন তিনি। এডুকে ফ্রি খেলতে দিলে ফাউলারের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য।

গোয়ার দেশীয় স্কোয়াডও একইরকম ঈর্ষণীয়। গোলে এখনও অব্দি সব ম্যাচেই শুরু করেছেন মহঃ নওয়াজ। এফসি গোয়ার মাঝমাঠে রয়েছেন ভারতীয় জাতীয় দলের ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ সহ লেনি রডরিগেজ, সেমিলেন ডঙ্গেল, প্রিন্সটন রেবেলোরা।

গতবারের টিম থেকে তাই কোরোমিনাস, হুগো বৌমাস এমনকি কোচ সার্জিও লোবেরা চলে গেলেও সেভাবে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি এফসি গোয়াকে।

বলাই যায়, লীগের অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি এসসি ইস্টবেঙ্গল। তার উপর ৭ দিনে খেলতে হচ্ছে ৩টি ম্যাচ। রিকভারির সময়ও কম। একথা ঠিক যে লাল হলুদ জনতা টিমের জয় ছাড়া আর কিছুই দেখতে চান না, তবে বাস্তব পরিস্থিতির বিচারে এই ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেও খুব খারাপ হবে না।

প্রি-ম্যাচ কনফারেন্সে কোচ রবি ফাউলারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বেশ পজিটিভ। এফসি গোয়াকে আলাদা করে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তিনি। আর পাঁচটা ম্যাচের মতো করেই দেখছেন তিনি। তবে একবার জয়ের স্বাদ পেয়ে যাওয়া এসসি ইস্টবেঙ্গল শিবির যে বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না এবছরের আইএসএলের আয়োজক শহরের টিমকে, সে কথা জোর দিয়ে বলাই যায়।

সব মিলিয়ে বছরের প্রথম সপ্তাহের মাঝে এক উপভোগ্য ম্যাচের আশায় টিভির সামনে বসতেই পারেন ফুটবলপ্রেমীরা।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.