সমস্যা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ইস্টবেঙ্গলের। গত রবিবারই, অর্থাৎ ৪ঠা জুলাই EBRP থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়, আবারও ট্রান্সফার ব্যানের কবলে পড়তে চলেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। শেষপর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো।
সাবেক কর্তাদের গড়িমসিতে জনি একোস্টার (Jhonny Acosta) বকেয়া বেতন না মেটানোয় ট্রান্সফার ব্যানের মুখে পড়তে হয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত কর্তারা একোস্টার বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ায় গতকালই ফিফা থেকে সেই ব্যান তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু এরমধ্যেই নতুন করে আবারও ট্রান্সফার ব্যানের মুখোমুখি এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal)। সৌজন্যে লাল হলুদ জার্সিতে খেলে যাওয়া আরও তিন ফুটবলারদের বেতন বাকি রাখা।
সোমবার ভারতীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এআইএফএফের (All India Football Federation) তরফ থেকে ইস্টবেঙ্গলকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দ্রুত পিন্টু মাহাতো (Pintu Mahato), রক্ষিত ডাগার (Rakshit Dagar) এবং আভাস থাপার (Abhash Thapa) বকেয়া বেতন মেটাতে, নইলে সম্ভাব্য ট্রান্সফার ব্যানের কবলে পড়তে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। এই মর্মে একটি অফিশিয়াল নোটিসও এসসি ইস্টবেঙ্গল কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। মোট বকেয়া বেতনের পরিমাণ প্রায় ৮ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা।
সূত্রের খবর, যতক্ষণ না সাবেক ক্লাবকর্তারা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করছেন এবং পারস্পরিক সমঝোতার রাস্তায় হাঁটছেন, ততক্ষণ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের উপর ভিত্তি করে বর্তমান ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই ট্রান্সফার ব্যান (Transfer Ban) তোলা নিয়ে কোনওরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না। যেহেতু শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি, সেহেতু সাবেক কর্তাদেরই এই ব্যাপারে বকেয়া মিটিয়ে এআইএফএফে (AIFF) আবেদন করতে হবে।
শ্রী সিমেন্ট (Shree Cement) ইস্টবেঙ্গলে আসার পরে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ দশমাস। কিন্তু কর্তারা এখনও চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেননি। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সামনে হওয়া মৌ চুক্তির প্রাথমিক টার্মশিটের উপর ভিত্তি করেই আইএসএলে (Indian Super League) খেলার জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকার উপর খরচ করে ফেলেছেন তাঁরা। কিন্তু তারপর থেকে ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা নানা অছিলায় চুক্তিতে সই করেননি। ফলে শ্রী সিমেন্ট আর কোনো ঝুঁকি নিতে আগ্রহী নন। চুক্তি সই না হলে আর একটি কানাকড়িও খরচের পক্ষপাতী নন তাঁরা। ফলে থমকে রয়েছে দলগঠনও। এরপর ট্রান্সফার ব্যান হলে নতুন মরশুমের দলগঠন ঘিরে আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হবে ইস্টবেঙ্গলকে (East Bengal)।
প্রসঙ্গত, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অগাস্টের ১৮ তারিখ নাগাদ শুরু হতে চলেছে কলকাতা প্রিমিয়ার লীগ (Calcutta Football League)। সেখানে টিম না নামালে আইএফএ-র (IFA) শাস্তির কবলে পড়তে হতে পারে ইস্টবেঙ্গলকে। আবার টিম নামাতে গেলে হাতে আর মাসখানেকের মতো সময়। এরমধ্যে দলগঠন করে অনুশীলন শুরু করতে হবে। ফলে, সাবেক কর্তারা দ্রুত সমস্যা না মেটালে আরও এক অনিশ্চিত ফুটবল মরশুমের সামনে দাঁড়িয়ে অগণিত লাল-হলুদ সমর্থকরা।