গ্ৰুপ বি-র শেষ খেলায় প্রত্যাশিত ভাবেই ফিনল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রূপ শীর্ষে থেকে শেষ ষোলোয় গেলো বেলজিয়াম। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বরের সাথে ৫৪ নম্বরের অসম লড়াইতে কিন্তু খুব সহজেই জিতে যায়নি বেলজিয়াম (Belgium national football team)। গোল পেতে ৭৩ মিনিট অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছিলো তাদের।
৫-৩-২ ছকে স্বাভাবিক ভাবেই ড্র করার জন্য দল সাজিয়েছিলো ফিনল্যান্ড। মাঝমাঠে একমাত্র পরিবর্তন স্কুলারের (Rasmus Schüller) জায়গায় অধিনায়ক স্পারভের (Tim Sparv) অন্তর্ভুক্তি। অপরদিকে ২ ম্যাচ জিতে থাকা বেলজিয়ামের টিমে ৮ টি পরিবর্তন করে চিরাচরিত ৩-৪-৩ ছকে খেলতে নামে। সম্পূর্ণ নতুন ৩ জন ডিফেন্ডার নামলো এই ম্যাচে। ডিফেন্সে আজ শুরু করলেন বয়োটা (Dedryck Boyata)। আগের দিনে পরিবর্ত নামা হ্যাজার্ড (Eden Hazard), দ্য ব্রুইনে (Kevin De Bruyne) আর উইটসেল (Axel Witsel) প্রথম থেকেই শুরু করলেন। এছাড়াও সুযোগ পেয়েছিলো ১৯ বছরের নতুন প্রতিভা ডকু (Jérémy Doku)। ৮টি পরিবর্তন করলেও হ্যাজার্ড আর দ্য ব্রুইনের আসায় এটাই বেলজিয়ামের এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ছিলো।
খেলার দখল প্রথম থেকেই বেলজিয়ামের কাছে ছিল। সারা খেলায় ৬০ শতাংশের উপরে বল পজেশন বেলজিয়ামের থাকলেও ফিনল্যান্ডের রক্ষণ ভালোই লড়াই করলো সারা খেলায়। ২২ মিনিটে দ্য ব্রুইনের বাঁ দিক থেকে দুজনকে কাটিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে সুন্দর একটা বল রাখলেও তা থেকে বিপদ তৈরি হয় নি। এছাড়া এইসময় উইটসেলের একটি শট সহজ সেভ করে ফিনল্যান্ডের গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের সবচেয়ে সহজ সুযোগ এসেছিলো ৩৭ মিনিটে লুকাকুর কাছে। দ্য ব্রুইনের বাড়ানো বলে বক্সের মধ্যে মাপা সেন্টার ফাঁকায় হেড দিলেও গোলকিপারকে পরাস্ত করতে পারেননি লুকাকু (Romelu Lukaku)। এ প্রসঙ্গে বলতে হয় ডকুর খেলা প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিট বাঁদিক থেকে বেশ খেলা নজরে পড়লো। ওই সময় বাঁদিক থেকে বার বার বিপদজনক খেলা তৈরি হচ্ছিলো ডকুর জন্য। ৪২ মিনিটে বাঁদিকে বল পেয়ে ইনসাইড করে ভেতরে ঢুকে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন ডকু। অনবদ্য সেভ করেন গোলকীপার হার্ডেকি (Lukáš Hrádecký)।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই রকম খেলা হতে থাকে। ৬৫ মিনিটে প্রতিআক্রমণ থেকে দ্য ব্রুইনের মাপা পাস থেকে বল পেয়ে লুকাকুর করা গোল ভার (VAR ) বাতিল করে। টিভি রিপ্লে অনুযায়ী সামান্য অফসাইড ছিলেন লুকাকু। শেষে ৭৩ মিনিটে ভার্মালিনের (Thomas Vermaelen) হেড পোস্টে লেগে ফেরার পথে হার্ডেকির গায়ে লেগে গোলে ঢুকলে গোল পায় বেলজিয়াম (১-০)। এরপর ৮১ মিনিটে আবার সেই দ্য ব্রুইনের পাস থেকে বল পেয়ে হাফ টার্নে অসাধারণ গোল করেন লুকাকু (২-০)। খেলায় আর গোল হয়নি। বেলজিয়ামের খেলা নজর কাড়লেও বলতে হয় হ্যাজার্ড চোট থেকে ফেরার পর এখনো পুরোনো ফর্ম পাননি। তবে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন লুকাকু আর দ্য ব্রুইনের।আশা করা যায় পরবর্তী কঠিন খেলাগুলোতে পুরোনো হ্যাজার্ডকে পাওয়া যাবে।
এই ম্যাচে আসার আগে দুটি খেলায় মাত্ৰ দুটো গোলে শট নিয়েছিলো ফিনল্যাণ্ড (Finland national football team)। এই খেলাতেও তাদের খেলার ধরণের পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু এতো রক্ষণাত্মক দল নিয়েও মাঝমাঠে অনেক পাস খেলে কখনো কখনো আক্রমনে উঠে এসেছে ফিনল্যান্ড। গোল না করতে পারলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে গোলের কাছাকাছি চলেও এসেছিলো তারা। সর্বোপরি ২ গোলে হারলেও একদম শেষ ১০ মিনিট ছাড়া খেলা থেকে কখনোই হারিয়ে যায় নি তারা। প্রথমবার কোনো বড়ো টুর্নামেন্ট খেলতে এসে ফিনল্যান্ডের এই খেলা প্রসংশনীয়। ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেষ করলো ফিনল্যাণ্ড। তবে গ্ৰুপের অন্য খেলায় ডেনমার্ক ৪-১ জিতে যাওয়ায় ফিনল্যান্ডের পক্ষে পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ এখনো আছে।