মরসুমের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে দেখে সমর্থকদের খারাপ লাগেনি।
মাত্র আঠেরো দিনের অনুশীলন। সঠিক প্রযুক্তিগতভাবে শারীরিক শক্তিবৃদ্ধির প্রশিক্ষণ হয়নি। ডায়মন্ড হারবার এফ সির (Diamond Harbour FC) বিরুদ্ধে দায়সারা একটা প্রস্তুতি ম্যাচ। এখনো গোটা টীম তৈরী হয়নি। এবং ভারতীয় নৌসেনার বিরুদ্ধে ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে গোল হয়নি। এতো নেই-এর মধ্যেও দলের খেলায় অধিকাংশ দর্শকবৃন্দ বেশ খুশি। ইমামীর (Emami) সর্ষের তেলের ঝাঁঝ খেলায় অতোটা না আসলেও গন্ধ একটু আধটু এসেছে।
বার দুয়েক পেশীর টান ছাড়া, ফিটনেসের অভাব তেমন ভাবে চোখে পড়েনি। অল্পদিনের মধ্যেও বোঝপড়া গড়ে উঠেছে কমবেশি। বিপক্ষ দূর্গে সুহেরের (V P Suhair) চেষ্টার অভাব ছিলোনা। অনিকেত (Aniket Jadhav), নাওরেম মহেশ (Naorem Mahesh Singh) আর মোবাশিরের (Mobashir Rahman) সাথে চমৎকার আদানপ্রদানের চেষ্টা গোটা লাল-হলুদ ব্রিগেডকে খুশি করবে। কিন্তু সুহের বক্স স্ট্রাইকার না হওয়ায় সামনে ক্লেইটন সিলভা (Cleiton Silva) আর আশেপাশে এলিয়ান্দ্র (Eliandro) এবং আলেক্স লিমার ( Alex Lima) উপস্থিতি বিপক্ষের কপালে ভাঁজ স্পষ্ট করে তুলবে।
অনিকেত যাদব আর মহেশ দুই প্রান্তকে সচল রাখার চেষ্টা করে গেছেন। নেভীর বিরুদ্ধে ম্যাচ অনুযায়ী অমরজিৎ (Amarjit Singh) এবং আঙ্গুসানা (Wahengbam Angousana) ব্লকিং এবং স্ন্যাচিং-এ যথেষ্ট উপযোগী হলেও কঠিন প্রতিপক্ষের সামনে আরো আগ্রাসী হতে হবে। বিদেশী খেলোয়াড়দের ভূমিকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। লিমা বা জর্ডান ও’ডোহার্টির (Jordan O’Doherty) মধ্যে হয়তো একজন খেলবেন। মোবাশিরের খেলা বেশ বুদ্ধিদীপ্ত এবং কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইনের (Stephen Constantine) তাকে বেশ কয়েকবার সাইডলাইনে ডেকে আলাদা করে নির্দেশ দিচ্ছিলেন। তাতে বোঝা যায় যে ২৪ বছর বয়সী টাটা ফুটবল একাডেমির এই প্রাক্তনী, কোচের কৌশল অনুযায়ী বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।
অংকিত মুখার্জী (Ankit Mukherjee) গত মরসুমে চোট ফিরিয়ে খান দুয়েক ম্যাচে স্টপারের ভূমিকায় বেশ সফল ছিলেন। এই ম্যাচেও দেখা গেলো উনি মাথা ঠান্ডা রেখে এই পজিশনে খেলবার ক্ষমতা রাখেন। পাশে লালচুনগুনগার (Lalchungnunga) মতো জুনিয়র খেলোয়াড়কে নিয়ে দু-একটি ছোট খাটো উদাহরণ ছাড়া রক্ষণভাগ বেশ জমাট রেখেছিলেন। ২১ বছর বর্ষীয় লালচুনগুনগা গত মরসুমে শ্রীনিদি ডেকানে (Sreenidi Deccan) নিয়মিত খেলেছেন। এছাড়া প্রীতম সিং (Pritam Kumar Singh), রাকিপ (Mohammad Rakip), এবং তুহিনের (Tuhin Das) খেলাও বেশ আশাব্যঞ্জক। মহীতোষ রায়ের (Mahitosh Roy) বড়ো দলের হয়ে প্রথম ম্যাচ। আরেকটু সময় দিতে হবে। লিস্টন কোলাসো (Liston Colaco), হীরা মন্ডল (Hira Mondal), ঋত্ত্বিক দাস (Ritwik Das)-রাও তো একটু একটু করে সুযোগ পাওয়ায় নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছে।
কোচের খুব পছন্দের খেলোয়াড় সুমিত পাসি (Sumeet Passi) অধিনায়কের ভূমিকায় নামেন। রক্ষণ, মাঝমাঠ এবং আক্রমণ ভাগেও কোচ খেলান সুমিতকে। বার দুয়েক ভালো ক্লিয়ারেন্স এবং একটি দূরপাল্লার শট বারপোস্টে লাগা ছাড়া সুমিত বাকি সতীর্থদের তুলনায় বেশ ম্রিয়মাণ। যদিও আর্মব্যান্ডের সৌজন্যে হাত-পা ছুঁড়ে বেশ কয়েকবার নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেন সহ-খেলোয়াড়দের প্রতি। বিরাট কোহলি মার্কা আগ্রাসন আর কি! পুরো দল এলে কে ক্যাপ্টেন হয় সেটা দেখার।
এতো পজিটিভের মধ্যেও একজন ফিজিও এবং রিজার্ভ বেঞ্চে কোনো গোলকিপার ছাড়া একটি পেশাদারি দলকে প্রতিযোগিতা মূলক টুর্নামেন্টে ফুটবল খেলতে দেখা খুব দৃষ্টিকটু। তা সে যতই প্রথম ম্যাচ হোক।