SC East BengalKerala Blasters FC
1 - 1Full Time |
0 |
|
0 |
0 |
|
0 |
0 |
|
0 |
0 |
|
0 |
Recap
প্রথম লেগের শেষে গোটা আইএসেলের চালচিত্রে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। প্রথম দিকে হারতে থাকা ওড়িশা এফসি, হায়দ্রাবাদ এফসি, কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি, এসসি ইষ্টবেঙ্গলরা যেমন জয়ের স্বাদ পেয়েছে তেমনি অপ্রতিরোধ্য এটিকে মোহনবাগান, এফসি গোয়া, চেন্নাইয়ান এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি-রাও পরাজয়ের স্বাদ পেয়ে গেছে। মুম্বাই সিটি এফসি ছাড়া এখন আর কেউই অপ্রতিরোধ্য নয়। যেকোন ম্যাচে যে কোন দল জিততে পারে। কিছু দলে চোট-আঘাত যেমন বদলে দিয়েছে দলের নীল নকশা আবার কিছু দলে নতুন খেলোয়াড় যোগ দেওয়ায় খুলে গেছে অপার সম্ভাবনার দুয়ার। শুধু বদলায়নি আইএসেল লীগ টেবিলের তলার দিকে থাকা দেশের সবচেয়ে বেশী সমর্থকপুষ্ট দুই দল এসসি ইষ্টবেঙ্গল বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
ফাওলারের সামনে যেমন এই ম্যাচ থেকে পুরো তিন পয়েন্ট তুলে জামশেদপুর এফসি ও বেঙ্গালুরু এফসি-র সাথে তেরো পয়েন্টে উঠে আসার হাতছানি ছিলো তেমনই ভিকুনার কাছে ছিলো পুরো তিন পয়েন্ট তুলে এসসি ইষ্টবেঙ্গলকে পেছনে ঠেলে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের সাথে বারো পয়েন্টে উঠে আসার। দুই কোচের কারো খেলাতেই তাই আধিপত্য ছেড়ে দিয়ে পয়েন্ট বাঁচানোর খেলা খেলতে দেখা যায়নি। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, বল দখলে রেখে আচমকা আক্রমণ, বল দখলে নেবার নিরন্তর প্রচেষ্টায় ম্যাচ বেশ টানটান চেহারা নেয়।
প্রথমার্ধের শুরুতেই কেরলের মুরে ইষ্টবেঙ্গলের ডিফেন্স টপকে ফাঁকায় বল পেয়ে যান যেখান থেকে প্রায় বিনা বাধায় গোলে শট নেন। দেবজিত সজাগ থাকায় ফাওলারের দুর্গ সুরক্ষিত থেকে যায় সে যাত্রায়। এরপরেও একবার বিনা বাধায় গোলে নেওয়া শট রুখে দিয়ে দেবজিত এখন আইএসেলের সবচেয়ে বেশী সেভ দেওয়া গোলকিপার। যদিও ম্যাচের চৌষট্টি মিনিটের মাথায় করে যাওয়া মুরের গোলটার সময় রানা ঘরামীর চূড়ান্ত ব্যর্থতা স্বত্ত্বেও দেবজিত চাইলে রুখতে পারতেন। গোল ছেড়ে বেরোনোর সময় দেবজিতের মধ্যে কয়েক ন্যানো সেকেন্ডের যে দ্বিধা দেখা যাচ্ছে সেইটুকু কাটিয়ে উঠতে পারলেই ফাওলারের এই ইষ্টবেঙ্গলের জালে বল পাঠাতে প্রতিপক্ষ গোলগেটারদের রীতিমতো কঠোর অনুশীলন আর ভাগ্যকে সহায় করে আসতে হবে। তবে সমতা ফেরানো গোলের পর নেভিলকে জড়িয়ে ধরা থেকে স্পষ্ট দেবজিত মুরের গোলটার জন্য নিজেকে দায়ী ভাবছিলেন। এই মনোভাব নিঃসন্দেহে দেবজিতকে আরো নিখুঁত হবার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যা হয়তো এসসি ইষ্টবেঙ্গলের জন্য এক মহা মূল্যবান সম্পদ হতে চলেছে।
এসসি ইষ্টবেঙ্গল ডিফেন্স যেখানে মোটামুটি নিজেদের দুর্ভেদ্য করে তুলেছিলো সেখানে একমাত্র বেসুরো বাজলেন রানা ঘরামী। তিন ডিফেন্ডারের লাইনে ফক্স-নেভিল দুটো পাশ খুব সুন্দর সামাল দিলেও রানা ঘরামী কিন্তু নিজেকে অটোমেটিক চয়েস হিসাবে উপস্থাপন করতে পারলেন না। অঙ্কিত নিজের কাজটুকু মোটামুটি সামাল দিলেও নারায়ন দাসের খেলায় ধারাবাহিকতার অভাব আজ আবারো প্রকট। অঙ্কিতের পরিবর্ত হিসাবে অল্প সময়ের জন্য এলেও প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেন ফাওলারের আদরের রাফা। বিশেষ করে বক্সের অনেকটা দূর থেকে বড়লোকের বাউন্ডুলে ছেলের মতো বল ওড়ানো দেখে ফাওলারকে বেশ বিরক্তই দেখালো। সারা মাঠ জুড়ে প্রথম একাদশে নামা মিলন সিং কে অকারণে বেপরোয়া পা চালিয়ে হলুদ কার্ড দেখা ছাড়া আর কিছুই করতে দেখা গেল না, বরং পরিবর্ত হিসাবে নামা অজয় ছেত্রী প্রথম একাদশে জায়গা মোটামুটি পাকা করে ফেললেন। আমাদি যদি পা না মাথা কোনটা বলের কাছে নেবেন সেটা সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন তবে গোল এসিস্টের খাতায় নাম উঠে যেতো নবাগত অজয় ছেত্রীর।
প্রত্যাশিত ভাবেই কিবু ভিকুনা অবাক গোল করে সাড়া ফেলে দেওয়া ব্রাইট এনোবাখারে র জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছিলেন। মজুত ছিলো মারধরের ব্যবস্থাও। সাথে রেফারীর হঠাৎ হঠাৎ ফাউল দেখেও বাঁশি বাজাতে ভুলে যাওয়া। আগের ম্যাচ গুলির মতো উদ্ভাসিত হতে না পারলেও দুটো ঠিকানা লেখা গোলের পাস সহ বেশ কয়েকবার গোলের সম্ভাবনা তৈরী করেছেন। হরমনপ্রীতের অনভিজ্ঞতার মাশুল হিসাবে কোনটা থেকেই গোল আসেনি। একটি ক্ষেত্রে কেরল ডিফেন্ডার জেসেল গোললাইন সেভ করে দলের পতন রোধ করেন। ব্রাইটের মতোই কেরলের সাড়া জাগানো ফরোয়ার্ড অস্ট্রেলিয়ান মুরে গোল পেলেও আগের ম্যাচগুলোর মতো ক্ষুরধার আক্রমন শানাতে পারেননি। গ্যারি হুপার ও ম্যাচের ওপর একাধিপত্য বিস্তারে ব্যর্থ।
প্রথম সাক্ষাতের মতোই অতিরিক্ত সময়ে ড্র হলেও এই ম্যাচে ৬৫ শতাংশ বলের দখল ও ৮৫ শতাংশ সঠিক পাস খেলেছে ইষ্টবেঙ্গল। তবুও ফাওলার কে সামান্য হলেও দুশ্চিন্তায় রাখবে একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে মিডিওদের বলের দখল হারিয়ে ফেলা। অজয় ছেত্রী এই সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন বলে আশা করা যায়। ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে ব্রাইট, মাঘোমা, পিলকিংটন, মাত্তিদের খোলামনে খেলার জায়গা তৈরী করে দেবার ক্ষমতা অজয় ছেত্রীর আছে। সেটপিসেও দলের জন্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন।
দুর্ভেদ্য ডিফেন্সের সাথে সাথে প্রয়োজনের সময় উঠে গিয়ে ফিলিপ লামের কায়দায় গোল করে আসার দক্ষতার কথা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে শোনা গেলেও তা ভারতের মাটিতে স্কট নেভিল করে দেখালেন দলের এগারো নম্বর ম্যাচে। সামনের ম্যাচগুলিতে এই ছন্দ ধরে রাখতে পারলে ফাওলারের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
যদিও ম্যাচ চলাকালীন ফাওলারের কিছু সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না সমর্থকদের কাছে তবে প্রতি ম্যাচ থেকে যতক্ষণ পয়েন্ট আসছে ততক্ষন ফাটকাও পরিকল্পিত চাল আর পয়েন্ট না এলেই অতিপরিকল্পিত পদক্ষেপও ফাটকা হয়ে যায়। এই ব্যাপারগুলি ফাওলার যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারেন তত এসসি ইষ্টবেঙ্গলের জন্য শেষ চারে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। দল আইএসেল শুরুর সময়ের চেয়ে যথেষ্ঠ ভালো কন্ডিশনে থাকলেও এই মাঠে ফেলে আসা পয়েন্টগুলি ভবিষ্যতে চলার পথকে সংকীর্ণ করতে বাধ্য। তবুও এই দলের উপর বাজি ধরাই যায়, স্বপ্ন দেখাই যায়।
Results
Club | Goals | Outcome |
---|---|---|
SC East Bengal | 1 | Draw |
Kerala Blasters FC | 1 | Draw |
Details
Date | Time | League | Season | Full Time |
---|---|---|---|---|
January 15, 2021 | 7:30 pm | Indian Super League | 2020 | 90' |
Ground
Tilak Maidan Stadium |
---|