বারোজনের বিরুদ্ধে লড়াই করেও এক পয়েন্ট এস সি ইস্টবেঙ্গলের
সব অপেক্ষার অবসান। শেষমেষ ঘরে প্রথম পয়েন্ট আনলো রবি ফাওলার ব্রিগেড। মনোরম ফুটবল উপহার না দিয়েও শুধু মাত্র রক্ষণের দাপটে জামশেদপুর এফসিকে কার্যত নাস্তানাবুদ করে ছাড়লো নেভিল, ইরশাদরা। যথাক্রমে ম্যাচের সেরা হওয়ার পুরস্কারও পেলেন মোহাম্মদ ইরশাদ।
শুরুর দিকে ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠ বিভাগ আধিপত্য দেখালেও খেলার ১০ মিনিট পর হাল ধরে নেয় জামশেদপুর এফসি। শংকর কে একা পেয়েও গোল করতে ব্যার্থ হন অনিকেত। এরপর ২৫ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মার্চিং অর্ডার পান ইউজেনসন লিংডো, যদিও দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বল ট্যাকেল করলেও ফলো আপ এ জামশেদপুর এর একটি খেলোয়ারের পায়ে বুট লাগে লিংডোর, যেটা রেফারির উচিত ছিল শুধু ফাউল ঘোষণা করা। কিন্তু এই নিয়ে দ্বিতীয় বার রেফারিং প্রতিকূলতায় পড়লো ইস্টবেঙ্গল। অযথা লালকার্ড দেখানোর সাথে সাথে আরো কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেন রেফারি, এক কথায় যাকে বলে “Horrendous” বা “Irresponsible”। এরম রেফারিং মান থাকলে আগামী কিছু বছর কেনো, আগামী ১০০ বছরেও ফুটবলের মান বাড়বে না ভারতে। প্রথমার্ধে এরম রেফারিং প্রতিকূলতায় পরা সত্বেও মাঝে মাঝে আক্রমণ তৈরি করে পিল্কিংটন, মঘোমারা। কিন্তু আবারও পজিটিভ স্ট্রাইকারের অভাব ভুগিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরো রক্ষণাত্মক টাক্টিকস নিয়ে নেয় ফাওলার ব্রিগেড। ফুলব্যাক হিসবে স্বচ্ছন্দ বোধ না করলেও যথেষ্ট ভালো খেলেছেন রফিক। অপরপ্রান্তে নারায়ণ দাস ভরসা জোগাছিলেন জামশেদপুর এফসির উইঙ্গার দের আটকে। ডিফেন্স- এ নেভিলের নেতৃত্বে নজর কারেন ইরশাদ ও শেহনাজ সিং। জামশেদপুর এফসির ত্রাতা নিকো ভালস্কিজ কে কার্যত পকেটে রেখেছিলেন এই দুই ভারতীয় ডিফেন্ডার। অ্যালেক্স ও এজে দুবার পোস্টে শট মারলেও এর বাইরে কোনো খেলোয়াড় মাথাচাড়া দিতে পারেনি। মাত্তি স্টেইনম্যান কার্যত একার হতে মাঝমাঠ সামলালেন দ্বিতীয়ার্ধে। আর অধিনায়ক পিল্কিংটন কেও যথেষ্ট কুর্নিশ জানতে হয়, যেমন আক্রমণ সামলেছেন, ঠিক সেভাবে পুরো টীমকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর পিলকিংটনের যথেষ্ট সহায়তা করেছেন মাঘমা। প্রথম ম্যাচ বাদ দিলে পর পর ৩ ম্যাচে নিজের জাত চিনিয়েছেন এই কঙ্গলিজ মিডিও।
প্রথম পয়েন্ট পেয়ে অনেক আত্মবিশ্বাস পাবেন খেলোয়াড়রা, সাথে প্রথম ক্লিনশিটও রাখলো লালহলুদ ব্রিগেড। গোলে শংকর রায় নজর কারলেও পেশীর টান নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরবর্তী ম্যাচ হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে, যারা এই মরশুমে এখনও অপরাজিত। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে তারা। যদিও পরের ম্যাচে অ্যারন হলোয়ে আর অধিনায়ক ড্যানি ফক্সের ফিট হয়ে ওঠার প্রবল সম্ভাবনা আছে। এই ড্রয়ের পর আশা করাই যায় আমরা এক নতুন ইস্টবেঙ্গলকে দেখার দিকে অগ্রসর হচ্ছি, কিছু সময় লাগবে, কিন্তু খারাপ সময়ের পর যে ভালো সময়ের আসাকে কেউ আটকাতে পারেনা!!! ধৈর্য ধরুন, পাশে থাকুন। জয় ইস্টবেঙ্গল।