ভিলে মাত্তি স্টেইনম্যান বা কোচ ফাউলারের পছন্দের “ম্যাটস” যে মানবিক উদ্যোগ দেখিয়েছেন তা হয়তো আজ অব্দি ভারতে খেলা কোনো বিদেশি খেলোয়াড়-ই দেখাননি। মাত্তি স্টেইনম্যান ভারতে এসেছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ফুটবল খেলতে, তবে সাথে সাথেই তিনি ভারতের মানুষদের কল্যাণের জন্য মানবিক কাজও করে যাচ্ছেন।
ঘটনাটি কি? আসলে গত ৯ জানুয়ারি বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতার পর মাত্তি স্টেইনম্যান নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি স্টোরি আপলোড করেন, যেখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে তিনি একটি “এনজিও”-এর সাথে যুক্ত যারা বৃষ্টির জল পরিশ্রুত করে পানীয় জল তৈরি করতে সাহায্য করে। আসলে ভারতে আসার সাথে সাথেই স্টেইনম্যান এই সংস্থাটির সাথে যুক্ত হন। প্রতি ম্যাচে “ইস্টবেঙ্গলের টনি ক্রুজ” যত কিলোমিটার দৌড়ান আর জেরোম পারফরম্যান্স করেন, সেই মতো অর্থ তিনি এই হিত্কার্যের প্রতি দান করেন।
তবে এই মানবিক উদ্যোগের সূত্রপাত জার্মানেই। ইস্টবেঙ্গল সূত্রের খবর মাত্তি বরাবরই পানীয় জলের বিষয়কে অনেক গুরুত্ব দেন। তিনি নিজের দেশেও দেখেছেন যে বিভিন্ন উপায়ে জল সংরক্ষণ করে পানীয় জলের সমস্যা দূরে রাখা যায়। ভারতে এসে ভারতীয় সরকারের “জলপ্রকল্পের” কথা শুনে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি তিনি, বরং মিশুকে স্বভাবের মাত্তি নিজেই একটি ডোমেইন খুলে ফেলেন আর নাম দেন, “মাত্তি রান্স ফর ওয়াটার, আই রান – উই অল সাপোর্ট।” মাত্তির ডোমেইনে গিয়ে অনুদান করতে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন।
এই অসাধারণ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ইতিমধ্যেই সহস্র লাল হলুদ সমর্থকরা অনুদান করেছে, সাথে বাকি ফুটবল সমর্থকরাও নিজেদের সাধ্য মতো অর্থ দান করেছেন। মাত্তির এহেন উদ্যোগ পুরো ভারতের ফুটবল সার্কিটে অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে গেছে এমনকি তার প্রাক্তন ক্লাব ওয়েলিংটন ফিনিক্সেরও সমর্থকেরা এই ক্যাম্পেনে অর্থ অনুদান করছেন। ইতিহাস ঘাটলে আরো বিস্ময়কর তথ্য সামনে আসছে, নিজের জন্মভূমি ন্যুরেমবার্গেও মাত্তি এরকমই একটি প্রকল্প শুরু করেছিলেন অতীতে।
আসলে মাত্তি স্টেইনম্যান যতই একজন ফুটবলার হন, সর্বোপরি তিনি একজন মানুষ। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরাও “মাত্তি” স্টেইনম্যানকে আদর করে “মাটির” মানুষ ডাকেন, আর আজ কিন্তু তিনি প্রমান করেই দিলেন তাকে দেওয়া সমর্থকদের ডাকনামটা শুধু একটা নাম নয়, তিনি যে সত্যিই মাটির মানুষ। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকবৃন্দ এবং ইবিআরপি-এর তরফ থেকে আমরা মাত্তি স্টেইনম্যানের এই মানবিক উদ্যোগকে প্রণাম জানাই। জয় ইস্টবেঙ্গল।