ট্রান্সফার ব্যানের কোপে ইস্টবেঙ্গল

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ইস্টবেঙ্গলের। এবার ট্রান্সফার ব্যানের কোপ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

আইএসএলের অভিষেক বছরে পারফরম্যান্স মোটেই চমকপ্রদ নয়। ১৯ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে এগারো দলের লীগে নয় নম্বরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। গোটা মরশুম জুড়েই মাঠের বাইরে একাধিক বিতর্ক লেগেই আছে। গত ২রা সেপ্টেম্বর রাজ্যের প্রধান প্ৰশাসনিক ভবন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে নতুন ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে ইস্টবেঙ্গল। দুপক্ষের মধ্যে মৌ স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু তার পর থেকেই একাধিক ইস্যুতে ক্লাব বনাম ইনভেস্টরের চাপানউতোর প্রকাশ্যে এসেছে।

কখনও শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চুক্তি ঘিরে ইস্টবেঙ্গলের বিশেষ ইজিএম-এ তিন সদস্যের আপত্তি এবং পরে মুচলেকা প্রদান, কখনও কোচ রবি ফাউলারের উপর ব্যান আরোপিত হওয়ার আগে সহকারী কোচ টনি গ্র্যান্টের বিতর্কিত ট্যুইট, এবং রবি ফাউলারের চার ম্যাচ নির্বাসনের পর ক্লাবের সাবেক কর্তাদের তরফ থেকে এআইএফএফের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান উষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগের প্রচেষ্টা শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের ভালোচোখে না দেখা এবং রীতিমত প্রেস বিবৃতি দিয়ে এই ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা, পাল্টা ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সাবেক কর্তার ক্ষোভপ্রকাশ – বিতর্কের আগুন নেভেনি।

এইসব বিতর্ক মিটতে না মিটতেই এবার নতুন সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল। আগামী দুটো রেজিস্ট্রেশান উইন্ডোর জন্য ট্রান্সফার ব্যানের কবলে পড়লো শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব।

সমস্যার সূত্রপাত পুরোনো ইনভেস্টর কোয়েস কর্পের বিদায়ের সময়। ইস্টবেঙ্গল থেকে কোয়েস বিদায় যখন আসন্ন, সেই সময় কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কোয়েস কর্তৃপক্ষ প্লেয়ারদের সঙ্গে চুক্তির ফোর্স মেজর ক্লজের ব্যবহার করেন। ফলত মার্চ ২০২০-র পর থেকে একাধিক প্লেয়ারের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। সূত্রের খবর, কোয়েস এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বিচ্ছেদের প্রাক্কালে স্পোর্টিং রাইটস ফেরত দেওয়া নিয়ে যে টানাপোড়েন দেখা যায়, তার নেপথ্যে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের বেতনের দায়ভার এবং ভবিষ্যতের চুক্তির দায়িত্বের ব্যাপারটাই সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় ছিল। এর দায়ভার ভবিষ্যতে ক্লাব নেবে, সেই শর্তেই স্পোর্টিং রাইটস এবং কোয়েস ইস্টবেঙ্গলের ৭০ শতাংশ শেয়ার অন্য কোনও আর্থিক দাবী ছাড়াই কোয়েসের তরফ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে সেইসময় বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ হয়, যদিও ক্লাব প্রশাসন এবং কোয়েস – কোনও তরফেই এই ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

ইতিমধ্যে প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটিতে এফপিএআই-এর সাহায্যে বাকি পড়ে থাকা বেতন নিয়ে অভিযোগ জানান গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গল জার্সি গায়ে মাঠে নামা পিন্টু মাহাতো, আভাস থাপা, রক্ষিত ডাগার, গুরবিন্দর সিং-রা।

সমস্যা হলো, শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি ঘোষণা হয় ২রা সেপ্টেম্বর, ২০২০-তে। স্বভাবতই তার আগের চুক্তিবদ্ধ ফুটবলারের দায়িত্ব শ্রী সিমেন্টের উপর বর্তায় না, যদি না তাঁরা স্বেচ্ছায় সেই দায়িত্ব নিতে চান, কারণ এইসব খেলোয়াড়দের চুক্তি শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ করেননি।

ফাইনাল এগ্রিমেন্ট সই না হওয়া নিয়ে দুপক্ষের চাপানউতোর দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। এই ব্যাপারে একাধিকবার মিডিয়াতে খবরও হয়েছে। দুতরফেই বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিও এসেছে। এইবার সেই বিতর্কে ঘি ঢাললো এই ট্রান্সফার ব্যান।

যেখানে এখনও পর্যন্ত দুপক্ষের বরফ গলেনি, আইএসএলের দ্বিতীয় লীগের ডার্বির পরে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এবং শ্রী সিমেন্টের প্রতিনিধিদের একসঙ্গে বসে সমস্যা মেটানোর কথা উঠলেও এখনও পর্যন্ত সেরকম কিছু ঘটেনি, সেখানে শ্রী সিমেন্ট আগামী মরশুমে থাকবে কিনা সেই নিয়েই দোলাচল রয়েছে। অনিশ্চয়তার আবহে নতুন মরশুমের দলগঠনও এখন বিশবাওঁ জলে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেও মিনার্ভা পাঞ্জাব থেকে সুখদেব সিংকে সই করানোর ইস্যুতে তৎকালীন জানুয়ারী উইন্ডোতে ট্রান্সফার ব্যানের মুখে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই ঘটনা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া হয়নি, তা দেখাই যাচ্ছে।

ট্রান্সফার ব্যানের ব্যাপারে আবেদন করলে কিছু সুরাহা হয় কিনা সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে নতুন করে উদ্ভূত এই সমস্যায় শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ মাথা গলাতে চান কিনা, সেটাই এখন দেখার।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.