প্রথম ৩ ম্যাচ ধরাশায়ী হওয়ার পর কাল ইস্টবেঙ্গল নিজেদের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামছে, প্রতিপক্ষ জামশেদপুর এফসি। ৩ টে পরপর হারের থেকেও যে কথাটা সমর্থক দের মনে থাকবে সেটা হলো নর্থইস্ট- এর বিরুদ্ধে ভালো খেলেও রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের জেরে হার স্বীকার করতে হয় ফাউলার ব্রিগেডকে। কিন্তু সব ভুলে দল এখন পরবর্তী খেলা গুলোর দিকে তাকাতে চায়। এই প্রতিবেদনে EBRP- এর তরফ থেকে আমরা আগামী মাচের একটা বিস্তারিত ম্যাচ প্রিভিউ সামনে আনার চেষ্টা করেছি।
জামশেদপুর ফুটবল ক্লাব
প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে হারার পর জামশেদপুর এফসি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চলতি আইএসএল – এ ৪ ম্যাচ খেলে টিমটি ৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচ এ ড্র করার পর শেষ ম্যাচে শক্তিশালী এটিকে কে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ওয়েন কয়লের দল। দলের প্রধান ভরসা লিথুয়ানিয়ার স্ট্রাইকার নিকো ভালস্কেজ। ভালস্কেজ আগের বছর চেন্নাইয়ের হয়ে ২০ ম্যাচে ১৫ গোল করার নজিরও করেছিল। তার ওপর বিদেশিদের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যে প্রথম সারির ভারতীয়দের দলে থাকাও বিপক্ষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া রেহেনেশকে প্রাথমিক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে গোলরক্ষক হওয়ার। আরেকটা প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়ও বেশ নজর কেড়েছে, যেটা হলো উইঙ্গার জ্যাকিচান্দ সিং।
বল দখলের লড়াইয়ে খানিকটা পিছিয়ে থেকেও কিন্তু বিপক্ষের রক্ষণের ভাঙন খুঁজে ঠিক গোল করার সুযোগ বার করতে পারছে জামশেদপুর। আর যেখানে ইস্টবেঙ্গলের মত টীম সামনে আছে, যারা ৩ ম্যাচে ৭ গোল হজম করেছে, বলাই বাহুল্য যে জামশেদপুরের আক্রমণ ভাগ যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে। অপর দিকে জামশেদপুরের রক্ষণ ভাগও খানিকটা দুর্বল, ৪ ম্যাচে ৬ গোল হজম করেছে ওরা।
স্পোর্টিং ক্লাব ইস্টবেঙ্গল:
শুরুটা খুব একটা ছন্দে না হলেও ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরা শুরু করেছে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ৩ ম্যাচের মধ্যে আগের ম্যাচে সব থেকে ভালো খেলেও ভাগ্যের পরিহাসে ঘরে পয়েন্ট তুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু আগের থেকে মাঝমাঠ বেশি জমাট হয়েছে, আর শেহনাজ কে দলে ফিরিয়ে এনে রক্ষণকেও কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে ফাউলার। কিন্তু একটা সমস্যা যেটা না পিছু ছাড়তে চাইছে, না তার কোনো সমাধান বেরিয়েছে, যেটা হলো একটা নাম্বার নাইনের অভাব। ইস্টবেঙ্গলের তৈরি অধিকাংশ আক্রমণ শেষে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে একটা স্ট্রাইকারের অভাবে। বলবন্ত বা বিনীত তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি, জেজে ফিটনেস সমস্যায় ভুগছেন। তবে একটু হলেও আসার আলো দেখাচ্ছে অ্যারন হলোয়ের ফিট হয়ে দলে ফিরে আসা। ডিফেন্স নিয়ে সমস্যা কিছুটা কমছে, কারণ গত ম্যাচে প্রথম গোল নির্ঘাত দুর্ভাগ্যবশত আত্মঘাতী গোল হলো, আর দ্বিতীয় গোলের সময় পুরো দল উঠে গেছিল আক্রমণ করতে আর বাকি সময় ডিফেন্স সেরকম ফাঁক পাওয়া যায়নি, কিন্তু মার্কিং সমস্যা রয়েই গেছে।
রবি ফাউলার নিজের খেলোয়াড়দের আলাদা করে বুঝিয়েছেন কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে, আর কোথায় উন্নতি করার প্রয়োজন আছে। ধীরে ধীরে খেলার মান বাড়লেও এখনও পুরোপুরি শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি এই নবনির্মিত ব্রিগেড। দরকার শুধু সময় এবং সমর্থকদের ধৈর্যের, কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ভক্ত হয়ে বলতে পারি আমরা ঠিক ঘুরে দাঁড়াবো, পুরো ভারত কে দেখিয়ে দেব “হারকর জিত্নে ওয়ালো কো বাজিগর কেহতে হ্যাইন” কথার আসল অর্থ কী।
সম্ভাব্য একাদশ:
জামশেদপুর: রেহেনেষ, রেন্থলেই, এজে, হার্টলি, রিকি, মবাশির রহমান, জ্যাকি, মনরয়, লালনুনফেলা, অ্যালেক্স, ভালস্কেজ।
ইস্টবেঙ্গল: দেবজিত, নেভিল, শেহনাজ, নারায়ণ, ইরশাদ, স্টেইনম্যান, লিংডো, সুর্চন্দ্র, পিলকিংটন, মাঘোমা, বিনিথ।