প্লে অফ খেলার সমস্ত আশা কার্যত শেষ ইস্টবেঙ্গলের, তারই মধ্যে দলের মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাব স্পষ্ট। পরের মরসুমে দল আইএসএল খেলবে কি না, খেললেও দলে কারা থাকবে না থাকবে, সব কিছু নিয়ে ধোঁয়াশায় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকবৃন্দ। কিন্ত তাও সমর্থকদের মুখের হাঁসি এখনো অটুট আছে, নেপথ্যে নাইজেরিয়ান মিডিও ব্রাইট এনবাখারে। ইস্টবেঙ্গলের ১০ নাম্বার জার্সিধারী আইএসএলে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় যার প্রমান আবার গতপরশুর ম্যাচ থেকে স্পষ্ট।
প্রথমার্ধে ছন্নছাড়া ফুটবল উপহার দেয় ইস্টবেঙ্গল, প্রথম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করতেও ব্যর্থ হন পিলকিংটন। তবে প্রথমার্ধের যাবতীয় আক্রমণের নেপথ্যে ছিলেন ব্রাইট। সাপের মতো এঁকেবেঁকে একের পর এক গোয়ার ডিফেন্ডারদের ডজ করে কয়েকবার সুন্দর বল সাজিয়ে দেন তিনি। কিন্তু আপফ্রন্টে পিলকিংটন ও জেজে ব্রাইটের তৈরি করা সমস্ত আক্রমণ এক কথায় ভেস্তে দেন।
মাঘমা আর ব্রাইটকে ফ্রি নাম্বার ১০ রোলে রেখে দল সাজান ফাউলার। মাঘমা ও নজর কাড়েন, তবে ব্রাইট সম্পূর্ণ আলাদা লেভেলে খেলে গেলেন পুরো ম্যাচ। দ্বিতীয়ার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। বার বার বা প্রান্ত থেকে ড্রিবল করে বক্সে বল পাঠাতে থাকেন ব্রাইট, তবে দুবার নিজের সর্বস্ব দিয়ে হারমানের শট বাঁচান ধীরাজ। দুটো ক্ষেত্রেই বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাইট।
খেলার ৭০ মিনিটের মাথায় ১০ জন হয়ে যায় গোয়া কারণ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন গোয়ার ক্যাপ্টেন এডু বেদিয়া। এর পর আক্রমণের ঝাঁজ আরো বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। সদ্য ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া ব্রাইট যেনো মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন একটা গোল করে নিজের ভাইকে উৎসর্গ করতে, কিন্ত ভাগ্যের কি পরিহাস, দলের একটাও খেলোয়াড় যোগ্য সঙ্গত দিতে পারলোনা তাকে।
খেলা শেষে ফাউলারের মুখ দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে লাল হলুদ বাহিনীর, তবে ভ্রাতৃহারা ব্রাইটের কষ্টটা হয়তো সব থেকে বেশি, কারণ সে যে নিজের ভাইকে শেষ ভালোবাসা টুকু জানাতে পারলোনা।