SC East BengalFC Goa
January 6, 2021
1 - 1Full Time |
দলটার নাম ইষ্টবেঙ্গল। শুধু দেশ নয়, দেশের বাইরেও যার পরিচিতি হার না মানা লড়াই আর অদম্য আগ্রাসনের জন্য। সবার পরে দল তৈরী, কম সময়ের প্র্যাকটিস, অন্যান্য দলে জায়গা না পাওয়া ভারতীয়দের নিয়ে দলগঠন, বিদেশী খেলোয়াড়দের শুরু থেকে ফিট না থাকা – পিছিয়ে থাকার অজস্র কারন থাকা স্বত্ত্বেও দমে যাওয়াটা ঠিক ইষ্টবেঙ্গলকে মানায় না। তাই সন্ধান ছিলো মাত্র একটা জয়ের। বছরের শুরুতে সেই কাঙ্খিত জয় পেতেই টিম থেকে শুরু করে সমর্থক সকলের মনোভাবে আমূল পরিবর্তন চলে আসে। জেগে ওঠে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার প্রয়াস। তাই জুয়ান ফেরান্দোর ছেলেদের কাছে কাজটা খাতায় কলমে সহজ হলেও মাঠে মোটেও সহজ ছিলো না।
ম্যাচ শুরুর আগেই ফাওলারের তৈরী স্কোয়াড বেশ চাঞ্চল্য তৈরী করে। ওড়িশা ম্যাচে বিশ্বমানের গোল করা জ্যাক মাঘোমা প্রথম একাদশেই নেই। তার বদলে অভিষেকেই বাজিমাত করা ব্রাইট এনোবাখারে খানিকটা প্রত্যাশিত হলেও শেষ ম্যাচের প্রথম গোলদাতা ও জায়গা পরিবর্তন করে সবচে লোড নিয়ে খেলা অ্যন্থনি পিলকিংটন আঠারো জনের দলেই নেই। সম্পূর্ন অপ্রত্যাশিত ভাবে তার জায়গায় আমাদি হলওয়ে প্রথম একাদশে। কোন রকম অঘটন না ঘটালেও ম্যাচের রঙ পাল্টে দেওয়ার মতো কিছুই করতে পারলেন না আমাদি। গায়ে গায়ে ম্যাচ খেলায় যাতে ক্লান্তি না আসে তার জন্য পিলকিংটন কে পুরো ম্যাচ আর জ্যাক মাঘোমাকে প্রথমার্ধ টা বিশ্রাম দেওয়া ছাড়া আর কোন রকম যুক্তিসঙ্গত কারন বোঝা গেলো না ফাওলারের এই সিদ্ধান্তের পেছনে।
ম্যাচের প্রথমার্ধকে অনায়াসে ইষ্টবেঙ্গলের তরফ থেকে দেবজিত মজুমদারের নাম অনুসারে “সেভজিত হাফ” নামকরন করা যেতে পারে। যা খেলা হলো পুরোটাই মোটের ওপর এফসি গোয়া বনাম দেবজিত মজুমদার। তবে পুরো পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ডিফেন্স ওড়িশা ম্যাচের মতো খোলা হাট হয়ে যায়নি। ডিফেন্সের বেসিক শেপটা অন্ততঃ ফক্স, নেভিল, রাজু রা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এঙ্গুলো, অরটিজ, জেসুরাজ, বেদিয়া দের তাই ক্রমাগতঃ বক্সের আশেপাশের অঞ্চল থেকে লম্বা শট নিয়ে গোল তোলার চেষ্টা করতে হয়েছে। তবে আইএসেলের অন্যান্য দলগুলির মতো এলোমেলো শট নয় এঙ্গুলোদের বেশীরভাগ শট গুলিই মাপা এবং অনটার্গেট হওয়ায় বেশ কয়েকবার গোলের সম্ভাবনা তৈরী হয়। এই সময়টায় দেবজিত গোলের নীচে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ানোয় এডু বেদিয়াদের একের পর এক নিশানায় অব্যর্থ শটগুলি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে থাকে।
Tonight's Hero of the Match shares his thoughts with us after producing a stellar performance to take his goals tally to 2️⃣ in 2️⃣! #SCEBFCG #ChhilamAchiThakbo #TheFutureIsBright pic.twitter.com/SbUV2WWMV5
— SC East Bengal (@sc_eastbengal) January 6, 2021
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে যেন অন্য ইষ্টবেঙ্গল খেলতে শুরু করে। বলের দখল নিজেদের পায়ে রেখে বারবার আক্রমন শানাতে থাকে গোয়ার ডিফেন্সে। ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাইট এনোবাখারে কে ফাউল করতে শুরু করেছিলো গোয়ার খেলোয়াড়েরা যা দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে যায়। তারমধ্যেও নারায়ন দাসেরা বেশ কিছু কর্নার ও ফ্রিকিক আদায় করে নেন। এরকম ই একটা ফ্রিকিক থেকে উঠে আসা বলে আমাদি হেড করে বল গোলে রাখতে ব্যর্থ হন, অধিনায়ক ফক্সের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ছাপান্ন মিনিটের মাথায় ফক্সের পা থেকে একটা বল খানিকটা বেরিয়ে এলে পঞ্চাশ পঞ্চাশ পরিস্থিতি তৈরী হয় ইষ্টবেঙ্গলের হাফে। পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিতে বলের ওপর ট্যাকলে যান ফক্স। বলের দখল নিজের আয়ত্বে নিলেও কোন এক দুর্বোধ্য কারনে রেফারী হঠাৎ লাল কার্ড দেখিয়ে দেন ফক্স কে। বল দখল করার পরেও লাল কার্ড দেখানো যায় এটা সম্ভবতঃ ভারতীয় রেফারীদের জন্য আলাদাভাবে তৈরী ফিফার কোন বইয়ে লেখা আছে। এই লাল কার্ডের পেছনে যদি বিপদজনক ট্যাকলের যুক্তিও ধরা হয় সেক্ষেত্রে ঐ পরিস্থিতি তৈরীর জন্য দায়ী জেসুরাজ। কার্ড থেকে বাঁচতে গেলে ডিফেন্ডারকে ঐ পরিস্থিতিতে সরে দাঁড়িয়ে এটাকারকে বল নিয়ে যেতে দিতে হবে!! নাকি এগারো জনের নতুন ইষ্টবেঙ্গল কে সামাল দেওয়ার মতো কোন স্ট্র্যাটেজি জুয়ান ফেরান্দোর নোটবুকে তোলা ছিলো না? রেফারীর ভুল সিদ্ধান্ত বারবার একটা দলের বিরুদ্ধে গেলে এইসব প্রশ্ন উঠতেই থাকবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইষ্টবেঙ্গল ম্যানেজমেন্ট রেফারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে টুর্নামেন্টের নিয়ামক সংস্থার কাছে।
রেফারীর বদান্যতায় অধিনায়ক ফক্সকে বাদ দিয়ে দশজনের ইষ্টবেঙ্গল ডিফেন্সিভ মোডে চলে যাওয়ার কথা ছিলো। বাস্তবে ঘটলো উল্টো, দশজন হবার পর ইষ্টবেঙ্গল আরো তেড়েফুঁড়ে আক্রমনে উঠতে লাগলো। নেতৃত্বে ব্রাইট এনোবাখারে ওরফে সমর্থকদের উজ্জ্বলদা। ডোনাকি, গঞ্জালেস রা রেফারীর প্রশ্রয়ে বেপরোয়া পা চালিয়েও এনোবাখারে কে রুখতে পারেনি। ম্যাচের ঊনআশি মিনিটে এনোবাখারে সেন্টার সার্কেলের কাছাকাছি জায়গা থেকে বল ধরে গোলকিপার সহ মোট পাঁচজন গোয়ার খেলোয়াড়কে রীতিমতো ধরাশায়ী করে বল ঠেলে দেন জালের ভেতর। টুর্নামেন্টের অর্ধেক বাকি থাকলেও এখন ই বাজি ধরে বলা যায় এই গোল প্রথম তিনটে সেরা গোলের মধ্যে থাকবে। আপাততঃ এটাই আইএসেলের সেরা গোল। যদিও এই গোলের মুগ্ধতা কাটিয়ে ওঠার আগেই একাশি মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে যায় ইষ্টবেঙ্গলের ডিফেন্স। সারা ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য এবং নির্ভুল ভাবে দুর্গ আগলে রাখার পর এই একাশি মিনিটেই দেবজিত মাত্র কয়েক ন্যানো সেকেন্ডের সিদ্ধান্তহীনতায় গোল ছেড়ে বেরোনোতে দেরী করে ফেলেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ম্যাচে সমতা ফেরান মুরগাওকর। ম্যাচে সমতা ফেরালেও ম্যাচের রাশ আর নিজেদের দখলে আনতে পারেননি আইএসেলের কুলীন দল এফসি গোয়ার ফুটবলারেরা। ব্রাইটের সামনে বারবার ব্যর্থ হতে হতে একসময় হতাশায় তাকে সরাসরি বিচ্ছিরি ভাবে ধাক্কা মেরে বসেন গোয়ার মাঝমাঠের এক খেলোয়াড়। কাঁধে সামান্য চোট লাগায় ব্রাইটকে তুলে নেন রবার্ট ফাওলার। দশজন হয়ে যাওয়ার পরেও ফাওলার ডিফেন্সিভ হবার বদলে মাঘোমা, সুরচন্দ্র দের নামিয়ে বার্তা পরিষ্কার করে দিলেন হাতে যা মাল মশলা আছে তা নিয়েই যতটা সম্ভব আক্রমনাত্মক ফুটবল ই খেলবেন। আর আবেগী ইষ্টবেঙ্গল সমর্থকরা যেকোন পরিস্থিতিতে আক্রমনাত্মক থাকতে ভালোবাসেন। মাইরা ফালামু-কাইট্যা ফালামু দের কোচ হিসাবে রবার্ট ফাওলার যতদিন যাচ্ছে তত যোগ্য থেকে যোগ্যতর হয়ে উঠছেন বৈকি।
Related
Results
Club | Goals | Outcome |
---|---|---|
SC East Bengal | 1 | Draw |
FC Goa | 1 | Draw |
Details
Date | Time | League | Season | Full Time |
---|---|---|---|---|
January 6, 2021 | 7:30 pm | Indian Super League | 2020 | 90' |
Ground
Tilak Maidan Stadium |
---|