সান্তাক্লজের অপেক্ষায় ইস্টবেঙ্গল

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

সারা বিশ্বে বড়দিন। রাজ্যজুড়ে জাঁকিয়ে পড়া শীতের আমেজ গায়ে মেখে অতিমারীর মধ্যেও কলকাতাবাসীও মেতে উঠেছেন উৎসবে।

দুহাজার কিলোমিটার দূরে গোয়ার ইস্টবেঙ্গল শিবিরের অবস্থা কিন্তু গ্রীষ্মের চাতক পাখির মতো। একটা জয়ের আশায় দিন গুনছেন সকলে। ইউটিউব ইন্টারভিউতে, প্রেস কনফারেন্সে টিমের শরীরী ভাষা ফুরফুরে থাকলেও ভিতরে ভিতরে চাপটা কিন্তু টের পাচ্ছেন সবাই।

কঠিন প্রতিপক্ষ:

চেন্নাইয়ান এফসি ধারে, ভারে, ফর্মে অনেকটাই এগিয়ে। দুবারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন ও গতবারের রানার্স আপরা এবারের আইএসএলটা জয় দিয়ে শুরু করলেও বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইয়ের মতো দুই হেভিওয়েট দলের কাছে পরপর হেরে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলো। তবে শেষ ম্যাচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়ে হারানো আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে পেয়েছে।

চেন্নাইয়ান এফসি-র মূলশক্তি তাদের প্রতিআক্রমণ ভিত্তিক ফুটবল। কোচ লাজলো গতবারের ভারতীয় ব্রিগেডটা অনেকটাই ধরে রেখেছেন। অনিরুদ্ধ থাপা, লাললিয়ানজুয়ালা ছাংতে, থোই সিং, গোলকিপার বিশাল কেইথ সমৃদ্ধ ভারতীয় ব্রিগেড কাগজেকলমে যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। কোচের তুরুপের তাস হতে পারেন তরুণ স্ট্রাইকার আমান ছেত্রী।

বিদেশীদের মধ্যে ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল ক্রিভেলারোর প্রসঙ্গে আলাদা করে কিছু বলার নেই। নিজের দিনে একই ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। রক্ষণে ভরসা জোগাচ্ছেন মৌরা। তবে আশাব্যঞ্জক তথ্য, দুরন্ত মাঝমাঠ ও স্ট্রাইকিং লাইন নিয়েও ছয় ম্যাচে মাত্র পাঁচ গোল করেছে দক্ষিণের এই দলটি।

ফাউলারের ভারতীয় ব্রিগেড:

চেন্নাইয়ানের ভারতীয় কোর টিমের কাঁটা তুলতে হবে ফাউলারের ভারতীয় ব্রিগেড দিয়েই। রবি ফাউলার তাঁর ভারতীয় স্কোয়াড নিয়ে দু-একবার উষ্মা প্রকাশ করলেও, একথা অনস্বীকার্য, কয়েকজন কিন্তু আশাতীত ফল করছেন। আলাদা করে বলতেই হয় মহঃ রফিক ও দেবজিৎ মজুমদারের কথা। রফিক প্রকৃতঅর্থেই ইউটিলিটি ফুটবলার। গতম্যাচে হঠাৎ আক্রমণভাগে নেমেও আক্রমণে যথেষ্ট ঝাঁজ এনে দিয়েছেন। রফিকের মাইনাস ক্লিয়ার করতে গিয়েই আত্মঘাতী গোল হজম করতে হয় কেরালা ডিফেন্সকে।

কিপিংয়ে দেবজিত অনবদ্য। আউটিংটা একটু নড়বড়ে হলেও তা পুষিয়ে দিচ্ছেন অসামান্য রিফ্লেক্স দিয়ে। লাল হলুদ শিবির এখনও অবদি দেবজিতের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করতেই পারে।

সতেরো বছর বয়সী হাওবাম তোম্বা সিং ছিলেন গতম্যাচের সারপ্রাইস প্যাকেজ। নজর থাকবে তাঁর দিকেও।

টিম ফর্মেশন:

অধিনায়ক ড্যানি ফক্স ফিরে আসায় কেরালা ম্যাচে সুরচন্দ্রকে রাইট ব্যাক ও বিকাশ জাইরুকে লেফট ব্যাক রেখে ৪-১-৪-১ ফর্মেশনে শুরু করেছিলো ইস্টবেঙ্গল। তবে আক্রমণের সময়ে প্রায়শই ৪-৩-৩ ছকে চলে গিয়েছিলো দল। ফলও মিলেছিলো হাতেনাতে। ফার্স্ট হাফে রফিক, মাগোমা এবং পিলকিংটনের ত্রিভুজে যথেষ্ট ব্যতিব্যস্ত ছিল কেরালা রক্ষণ। আশা করা যায়, এই ম্যাচেও মোটামুটি একই কম্বিনেশনে নামতে চলেছে দল।

নতুন বিতর্ক:

তবে এত কিছুর পরেও ইস্টবেঙ্গল দলে হঠাৎ বিতর্ক কিছু ফুটবলারের রিলিজ/লোন নিয়ে। বিশেষত সামাদ আলি মল্লিকের আচমকা কলকাতায় ফিরে আসাটা মানতে পারছেন না অনেক সমর্থকই। এই ম্যাচ তাই রবি ফাউলারের কাছে খানিকটা অ্যাসিড টেস্ট তো বটেই। দলে টিকে যাওয়া ভারতীয় ব্রিগেড যদি দ্রুত আশানুরূপ ফল না করতে পারেন, তাহলে কিন্তু ফাউলারের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং সহকারী কোচ রেনেডি সিংয়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

তবে যাই হোক, সব বিতর্ক দূরে সরিয়ে, ক্রিসমাসের ছুটি কাটিয়ে ম্যাচে মনোনিবেশ করাটাই এখন প্রধান লক্ষ্য লাল-হলুদের। একটা জয়, তিন পয়েন্ট সব সমালোচনার মুখেই কুলুপ এঁটে দেয়।

বক্সিং ডে’র সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গল শিবিরের কোন খেলোয়াড় সান্তাক্লজ হয়ে বড়দিনের উপহার হিসেবে মরসুমের প্রথম তিন পয়েন্ট এনে দেন দলকে, সেটাই এখন দেখার।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

One Comment

  1. Debanik Biswas

    খুবই ভালো লেখা।
    আরও এমন লেখা বেরোনো উচিৎ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.