নতুন বছরটা জয় দিয়েই শুরু করল ইস্টবেঙ্গল । সমর্থকদের সমস্ত উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে, নিজেদের অষ্টম ম্যাচে ফাউলার বাহিনী, ওড়িশা এফসি কে ৩-১ গোলে পরাজিত করল। জয় পেলেও, লালহলুদের ডিফেন্স কিন্তু চিন্তায় রাখবে কোচকে। ৮ টি ম্যাচে এখনো পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল হজম করেছে ১৪ টি গোল এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে বার ও পোস্ট তাদের সহায়ক হয়েছে। গোলকিপার দেবজিত মজুমদারও কিছু ক্ষেত্রে দলের নিশ্চিত পতন রোধ করেছেন। টিমটার মূল সমস্যা কোথায়? সমস্যা কি ফিটনেস? ঠিক কোন সময়টা, টিম ইস্টবেঙ্গল সবচেয়ে বেশী গোল খাচ্ছে? বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরার চেষ্টা করলাম আমরা। সেই সঙ্গে অন্যান্য টিমের গোল খাওয়ার সময়ের সাপেক্ষে একটা তুলনামূলক আলোচনারও চেষ্টা করা হল।
০৩–০১–২০২১ পর্যন্ত, আইএসেলের ১১ টি দল সম্মিলিত ভাবে ১০২ টি গোল হজম করেছে। এই ১০২ টি গোলের মধ্যে, ৪০ টি হয়েছে প্রথমার্ধে ও ৬২টি হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। সমগ্র ৯০ মিনিটকে ৪ টি অর্ধে ভাগ করে দেখলে উঠে আসে বেশ কিছু আকর্ষণীয় তথ্য। এই ৪ টি অর্ধ হল
১) ০-৩০ মিনিট (খেলা শুরু থেকে প্রথম জলপানের বিরতি পর্যন্ত)
২) ৩০-৪৫ মিনিট (প্রথম জলপানের বিরতি থেকে হাফ টাইম পর্যন্ত)
৩) ৪৫-৭৫ মিনিট ( হাফ টাইম থেকে দ্বিতীয় জলপানের বিরতি পর্যন্ত)
৪) ৭৫-৯০ মিনিট (দ্বিতীয় জলপানের বিরতি থেকে খেলার শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত)
১০২ টি গোলের মধ্যে, ০-৩০ মিনিটের মধ্যে হয়েছে ২৪ টি গোল (২৩.৫%), ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে ১৮ টি গোল যা মোট গোলের ১৭.৬৫ শতাংশ। ৪৫-৭৫ মিনিটের মধ্যে হয়েছে ৩৮ টি গোল (৩৭.২৫%) ও ৭৫ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে হয়েছে ২২ টি গোল (২১.৫৭%)।
দল ভিত্তিক প্রদর্শন
এস সি ইস্টবেঙ্গলঃ এখনো পর্যন্ত এস সি ইস্টবেঙ্গল হজম করেছে ১৪ টি গোল (১১ টি দলের মধ্যে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বেশি)। এই ১৪ টি গোলের মধ্যে ১১ টিই দ্বিতীয়ার্ধে। ৪৫ থেকে ৭৫ মিনিটের মধ্যে টিম হজম করেছে ৭ টি গোল অর্থাৎ মোট হজম করা গোলের ৫০ শতাংশ। ৭৫ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে হজম করা গোলের সংখ্যা ৪। (দ্বিতীয়ার্ধে কি দাঁড়িয়ে পড়ছে টিম? সমস্যা কোথায়- ফিটনেস??)।
এটিকে মোহনবাগানঃ এখনো পর্যন্ত মাত্র ৩ টি গোল (১১ টি দলের মধ্যে যুগ্মভাবে সবচেয়ে কম) হজম করেছে দলটি। এই ৩ টি গোলের মধ্যে ১ টি প্রথমার্ধে (৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে) ও ২ টি দ্বিতীয়ার্ধে (৪৫ থেকে ৭৫ মিনিটের মধ্যে)। নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ডিপ-ডিফেন্স এটিকের।
মুম্বাই সিটি এফসিঃ এই দলটিও এখনো পর্যন্ত মাত্র ৩ টি গোল ( এটিকের সঙ্গে যুগ্মভাবে সবচেয়ে কম) হজম করেছে। এই ৩ টি গোলের মধ্যে ২ টি প্রথমার্ধে (০-৩০ ও ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে ১ টি করে) ও ১ টি দ্বিতীয়ার্ধে (৪৫ থেকে ৭৫ মিনিটের মধ্যে)। মুম্বাই সিটি এফসির ডিফেন্স ও কিন্তু অনবদ্য ফুটবল খেলছে আইএসেলে।
বেঙ্গালুরু এফসিঃ এখনো পর্যন্ত বেঙ্গালুরু এফসি খেয়েছে ৯ টি গোল । এই ৯ টি গোলের মধ্যে ৩ টি প্রথমার্ধে (০-৩০ ও ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে যথাক্রমে ২ টি ও ১ টি করে) ও ৬ টি দ্বিতীয়ার্ধে (৪৫ থেকে ৭৫ মিনিটের মধ্যে ৪ টি ও ৭৫-৯০ মিনিটের মধ্যে ২ টি)।
চেন্নাইন এফসিঃ এখনো পর্যন্ত এই দলটি খেয়েছে ৭ টি গোল । এই ৭ টি গোলের মধ্যে ৩ টি প্রথমার্ধে ও ৪ টি দ্বিতীয়ার্ধে ।
এফসি গোয়াঃ এফসি গোয়া এখনো পর্যন্ত খেয়েছে ১০ টি গোল । এই ১০ টি গোলের মধ্যে ৪০ শতাংশ প্রথমার্ধে (০-৩০ ও ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে উভয়ক্ষেত্রেই ২ টি করে) ও ৬০ শতাংশ দ্বিতীয়ার্ধে (৪৫ থেকে ৭৫ ও ৭৫-৯০ মিনিটের মধ্যে উভয়ক্ষেত্রেই ৩ টি করে)।
হায়দ্রাবাদ এফসিঃ এই দলটির অবস্থা অনেকটা ইস্টবেঙ্গলের মত। মোট গোল খেয়েছে ১০ টি যার মধ্যে ৭০ শতাংশই দ্বিতীয়ার্ধে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ৭৫ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে দলটি গোল খেয়েছে ৫ টি অর্থাৎ মোট গোলের ৫০ শতাংশ।
জামশেদপুর এফসিঃ এই দলটি এখনো পর্যন্ত খেয়েছে ৯ টি গোল (০-৩০, ৪৫-৭৫ ও ৭৫-৯০ মিনিটের প্রতিক্ষেত্রেই ৩ টি করে)। উল্লেখ্য, দলটি ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে কোন গোল খায় নি।
কেরালাব্লাস্টার এফসিঃ এখনো পর্যন্ত এই দলটি খেয়েছে ১৩ টি গোল । এই ১৩ টি গোলের মধ্যে ৫ টি প্রথমার্ধে ও ৮ টি দ্বিতীয়ার্ধে । ৪৫-৭৫ মিনিটের মধ্যে দলটি হজম করেছে ৪৬.১৫% গোল।
নর্থইস্ট উনাইটেড এফসিঃ এখনো পর্যন্ত এই দলটি খেয়েছে ১০ টি গোল, প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় অর্ধেই ৫ টি করে । উল্লেখ্য, দলটি ৭৫-৯০ মিনিটের মধ্যে কোন গোল খায় নি।
ওড়িশা এফসিঃ এখনো পর্যন্ত এই ১৪ টি গোল খেয়েছে দলটি এবং সম্ভবত একমাত্র দল যারা দ্বিতীয়ার্ধের (৪) থেকে প্রথমার্ধে (১০) বেশি গোল খেয়েছে।
Source : Indian Super league