শেষ ষোলোর প্রথম বড়ো ম্যাচে স্পেনের সেভিলাতে অবস্থিত এস্তাদিও লা কার্তুহাতে (Estadio La Cartuja de Sevilla) মুখোমুখি হয়েছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল (Portugal national football team) এবং ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট বেলজিয়াম (Belgium national football team)। আরও একটি গুরুত্ব ছিল এই ম্যাচের। ইরানের আলি দায়িকে (Ali Daei) পিছনে ফেলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হবার জন্য ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) দরকার ছিল আর একটিমাত্র গোল।
প্রথমার্ধে খেলা হয় মন্থর গতির। দুই পক্ষই দু-একটি হাফ চান্স পেলেও সোজাসাপ্টা সুযোগ কোনো দলই পায়নি। প্রথম আধ ঘন্টা মূলত চলে খেলার উপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লড়াই। ২৫ মিনিটের মাথায় রোনাল্ডোর জোরালো ফ্রিকিক কোনও রকমে সামলান থিবো কুর্তোয়া (Thibaut Courtois)। ফিরতি বল গোলে ঠেলতে পারেননি পলিনিয়া (João Palhinha)। ম্যাচের ৪২ মিনিটে থরগান হ্যাজার্ডের (Thorgan Hazard) ২৫ গজের অসাধারণ শটে প্রথম গোল পেয়ে যায় ফিফা ক্রমপর্যায়ে বিশ্বের এক নম্বর দেশ (১-০)। প্রথমার্ধে খেলার বিচারে গোলটি বাদ দিলে দুই দলকে পার্থক্য করার খুব একটা জায়গা নেই, বরঞ্চ শটের বিচারে অনেকটাই এগিয়ে ছিল পর্তুগাল।
😮 THAT Thorgan Hazard strike = Goal of the Round 𝗖𝗢𝗡𝗧𝗘𝗡𝗗𝗘𝗥?@GazpromFootball | #EUROGOTR | #EURO2020 pic.twitter.com/GUCkcGg7mk
— UEFA EURO 2020 (@EURO2020) June 27, 2021
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বসে যান কেভিন ডি ব্রুইনে (Kevin De Bruyne)। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে পলিনিয়ার পিছন থেকে করা একটি ট্যাকেলে চোট পান ডি ব্রুইনে। তাঁর জায়গায় নামেন নাপোলির হয়ে খেলা ড্রাই মের্টেন্স (Dries Mertens)। এর ফলে বিঘ্নিত হয় বেলজিয়ামের মাঝমাঠের ছন্দ। ৫৬ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন পতুগীজ কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস (Fernando Santos)। জোয়াও মুতিনহো (Joao Moutinho) এবং বার্নার্ডো সিলভার (Bernardo Silva) পরিবর্তে মাঠে আসেন আথলেটিকো মাদ্রিদের (Atlético Madrid) জোয়াও ফেলিক্স (João Félix) এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের (Manchester United) ব্রুনো ফার্নান্দেজ (Bruno Fernandes)।
পর্তুগালের খেলায় ধার এবং গতির সঞ্চার হলেও, চোরাগোপ্তা মারামারি চলতে থাকে আর হলুদ কার্ডের ঝলকানি বাড়তে থাকে। এতে যদিও সুবিধা হয় বেলজিয়ামেরই। পুরো দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেললো বেলজিয়াম। এডেন হ্যাজার্ড (Eden Hazard) আর লুকাকু (Romelu Lukaku) প্রতি-আক্রমণ তুলে ইনসিওরেন্স গোলের খোঁজ করতে থাকেন। যদিও লুকাকু এবং এডেন হ্যাজার্ডের হ্যামস্ট্রিং-এ টানের পর মাঠে আসা কারাস্কো (Yannick Carrasco) একাধিক সুযোগ নষ্ট করেন। রোনাল্ডোকে খুব কঠিন মার্কিং-এ রাখা হলেও পর্তুগালও সুযোগ পায় প্রচুর। পর্তুগাল খেলায় দখল রাখলেও রেনাতো স্যাঞ্চেজরা (Renato Sanches) তার সুযোগ নিতে পারেনি। তাদের শট হয় কুর্তোয়ার নিরাপদ দস্তানায় অথবা দর্শকাসনে জমা পড়েছে। যদিও ৮৩ মিনিটে রাফায়েল গেরেরোর (Raphaël Guerreiro) শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।

রবের্তো মার্টিনেজের (Roberto Martínez) দল ২রা জুলাই শেষ আটের লড়াইয়ে নামবে ইতালির (Italy national football team) বিরুদ্ধে। তবে তাঁকে চিন্তায় রাখবে চোট-আঘাতের সমস্যা, যদিও রক্ষণ নিয়ে তিনি নিশ্চিন্ত থাকতেই পারেন। মুনিয়ের (Thomas Meunier) একটি দুর্দান্ত ম্যাচ উপহার দিলেন। তবে ইউরো ২০২০-তে (UEFA EURO 2020) মুড়ি-মুড়কির মতো রেকর্ড ভাঙ্গতে থাকা রোনাল্ডোর ১১০ নম্বর গোলটি ওনার জীবনের খুব সম্ভবত শেষ ইউরো কাপে করা হলো না।
