“বিতর্কিত” পেনাল্টিতে ৫৫ বছর পর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে ইংল্যান্ড

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

দীর্ঘ ৫৫ বছর পর কোনো বড়ো টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবে ইংল্যান্ড। তবে কি শেষমেশ কাপ ঘরে আসছে (It’s coming home)?

দুটো দলের পতাকায় যোগ চিহ্ন থাকলেও ফাইনালে যোগদান করলো ইংল্যান্ড (England national football team)। লন্ডন শহর তথা সমগ্র ইংল্যান্ডে কাপ ঘরে নিয়ে আসার উৎসাহ বাড়ছে। সাথে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে (Wembley Stadium) ইংরেজদের গর্জন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। আজ মাঠে আসার জন্য কোভিড সংক্রান্ত কিছু বিধি নিষেধ যেমন, ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট নিয়ে আসার আবশ্যকতা থাকলেও, মাঠের মধ্যে সমর্থকদের উল্লাস দেখে হয়তো কোভিড-ও ভয় পেয়ে যেত। দুটো দলের পতাকাই লাল আর সাদা। গোটা স্টেডিয়ামটাই তাই লাল-সাদা হয়ে উঠেছিল। ডেনমার্কের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের মতোই ম্যাচের শুরুতে ডেনমার্ক অধিনায়ক সিমন ক্যারের (Simon Kjær) হাতে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন (Christian Eriksen) নাম ও দশ নম্বর লেখা ইংল্যান্ড জার্সি তুলে দেন ব্রিটিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন (Harry Kane)।

খেলার প্রথম দশ মিনিট থ্রী লায়ন্সের (The Three Lions) দাপট থাকলেও, তার পরের কুড়ি-পঁচিশ ডেনমার্ক খেলা ধরে নেয়। সেই সময়টায় ডেনমার্কের রক্ষণ ভাগ নিজেদের অর্ধেই নিজেদের মধ্যে বেশীরভাগ পাস খেলছিল। একটু জায়গা সামনে নিয়ে খেলতে পছন্দ করা ম্যাসন মাউন্ট (Mason Mount) এবং রাহীম স্টার্লিং (Raheem Sterling) তেমন প্রেস করছিলেন না, আর হ্যারি কেনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এরইমধ্যে চকিতে কয়েকটি পাস খেলে বিপক্ষ বক্সে পৌঁছে যাচ্ছিলো ডেনমার্ক (Denmark national football team)।

মার্চ মাসের পর থেকে ৬৯১ মিনিট কোনো গোল খায়নি ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ সালের মে থেকে জুলাই মাস অবধি জাতীয় দলের হয়ে ৭২০ মিনিট কোনো গোল খাননি কিংবদন্তি গোলরক্ষক গর্ডন ব্যাংকস (Gordon Banks)। সেটিই এতদিন ইংল্যান্ডের হয়ে রেকর্ড ছিল, যা আজ ভেঙ্গে দেন পিকফোর্ড (Jordan Pickford)। ত্রিশ মিনিটে প্রতিযোগিতার প্রথম সরাসরি ফ্রি কিক থেকে গোল করেন মিকেল দামসগার্ড (Mikkel Damsgaard) (১-০)

এই গোলটির সময় একটি মজার বিষয় লক্ষণীয়। ডেনমার্কের তিন খেলোয়াড় যখন ইংল্যান্ড ওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো, মাঝে বেশ খানিকটা জায়গা খোলা ছিল পিকফোর্ডের জন্য। কিন্তু শট নেবার ঠিক আগের মুহূর্তে ড্যানিশ খেলোয়াড়রা নিজেদের অবস্থান থেকে সামান্য সরে এসে সেই জায়গাটা বন্ধ করে দেন। ফলতঃ এভার্টনের (Everton) গোলরক্ষক পিকফোর্ডের বলের উপর নজর রাখতে অসুবিধা হয়, এবং শেষমেশ তিনি গোল হজম করেন।

গোল পাওয়ার পরে কিছুটা মনঃসংযোগ হারায় ড্যানিশ খেলোয়াড়রা। কেন, স্টার্লিং-এর নেতৃত্বে আবার তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এই সময় রাহীম স্টার্লিং একটি অভূতপূর্ব সুযোগ পান, ছয় গজ বক্সের ভিতরে একা পেয়ে যান ক্যাসপার শ্মাইকেলকে (Kasper Schmeichel)। কিন্তু শ্মাইকেলের দুর্দান্ত পজিশনিংয়ের দৌলতে স্টার্লিং সোজা হাতে মারেন। তার ঠিক পরেই ৩৯ মিনিটে, টুর্নামেন্টের একদশতম আত্মঘাতী গোলটি করেন ডেনমার্কের অধিনায়ক সিমন ক্যার (Simon Kjær)। যদিও গোলের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেওয়া উচিত বুকায়ো সাকাকে (Bukayo Saka)। কেনের একটি চমৎকার রক্ষণ ভেদী থ্রু বল অত্যন্ত বুদ্ধিমত্বার সাথে পৌঁছে বক্সের বাম দিক দিয়ে আসা স্টার্লিংয়ের উদ্দেশ্যে দুর্দান্ত জোরালো নিচু ক্রস রাখেন আর্সেনালের (Arsenal F.C.) হয়ে খেলা উনিশ বছরের তরুণ। উপায়ান্তর না দেখে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই বল জড়িয়ে দেন ক্যার। কিছুই করার থাকেনা শ্মাইকেলের (১-১)।

এরপর গোটা ম্যাচটাই হলো ধৈর্য্যের খেলা, ডেনমার্কের রক্ষণ বনাম ইংল্যান্ডের আক্রমণ। টুর্নামেন্টে তিন গোল করে ফেলা ক্যাসপার ডোলবার্গ (Kasper Dolberg), আক্রমণের প্রধান সেনাপতি মার্টিন ব্রেথওয়েট (Martin Braithwaite), আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় টমাস ডেলানি (Thomas Delaney) বা দামসগার্ড, কেউ-ই ইংল্যান্ডের গতির পাশে পেরে ওঠেনি। অন্যদিকে মাউন্ট (Mason Mount), সাকা, স্টার্লিং, ওয়াকার (Kyle Walker), লুক শ ‘ (Luke Shaw), ফিলিপ্স (Kalvin Phillips) এবং ম্যাগুয়ের (Harry Maguire) গোটা মাঝমাঠ এবং রক্ষণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। ক্রমাগত ব্রিটিশ আক্রমণের মাঝে বক্সের প্রায় ভিতরে কেনের উপর একটি ফাউল করা হয়, যা থেকে রেফারি ড্যানি ম্যাকেলি (Danny Makkelie) এবং ভ্যার (VAR) ইংরেজদের আবেদন নাকচ করে, কেনকে একটি হলুদ কার্ড দেখানো হয়। কিন্তু পেনাল্টি দেওয়াও যেত।

ইউরো কাপের ইতিহাসে এই প্রথম (৭ টা) এতগুলো ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গেলো। অতিরিক্ত সময়ের ১৪ মিনিটে স্টার্লিংয়ের আউটলাইন বরাবর ছোট বক্সে ঢুকে আসার একটা গতিময় চেষ্টা, ইংল্যান্ডকে একটি পেনাল্টি উপহার দিলো। যদিও বিতর্ক থেকে যাচ্ছে। প্রথমত খুব ছোটো, আর নিরীহ একটি ধাক্কায় পড়ে যান স্টার্লিং। রিপ্লেতে আরো পরিষ্কার দেখা যায় যে, সংঘর্ষের আগে থেকেই স্টার্লিং পড়ে যেতে থাকেন। যদিও রেফারি মাঠের মনিটরে যাবার প্রয়োজন বোধ করেননি। পেনাল্টি শটটি শ্মাইকেল প্রথম প্রয়াসে বাঁচালেও তাঁর দুভাগ্য যে তাঁর হাতে প্রতিহত হয়ে বল সোজা ফিরে চলে যায় কেনের পায়ে। এবার আর গোল করতে ভুল করেননি কেন (২-১)। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ডেনমার্ক।

অসাধারণ খেললেন ক্যাস্পার শ্মাইকেল। তার দুর্ভাগ্য যে বাবা পিটার শ্মাইকেলের (Peter Schmeichel) মতন ইউরো চ্যাম্পিয়ন এইবার অন্তত তার হওয়া হলোনা। ম্যাচের সাতষট্টি মিনিটে ইউসুফ পৌলসেন (Yussuf Poulsen) মাঠে নামলেও তাঁর চোট যে পুরোপুরি সারেনি তা বোঝা যাচ্ছিলো। ব্রেথওয়েট বারবার একা পড়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে নিভলো ড্যানিশ ডাইনামাইটদের (Danish dynamite) সলতের আগুন। কিন্তু তাদের লড়াই রূপকথার গল্প হয়ে থাকবে তাদের ফুটবল ইতিহাসে।

যদিও বিশ্বের দশ নম্বর দলের কোচ কোচ ক্যাসপার হুলমন্ড (Kasper Hjulmand) এই ম্যাচে নিজেদের আন্ডারডগ হিসেবে গণ্য করতে রাজি ছিলেন না। বিশ্বের চার নম্বর গ্যারেথ সাউথগেটের (Gareth Southgate) সামনের তিনজনের গতির ভরসায় আক্রমণ ভিত্তিক খেললেও, ডেনমার্ক নিজেদের রক্ষণের উপর বিশ্বাস রেখে অত্যন্ত রক্ষণশীল ফুটবল খেলে। রক্ষণ ভাগ প্রায় পেনাল্টি বক্সের ভিতর দাঁড় করিয়ে সেমিফাইনাল ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন।

১১ই জুলাই প্রথমবারের ফাইনালিস্ট থ্রী লায়ন্স মুখোমুখি হচ্ছে চতুর্থবারের জন্য ফাইনালিস্ট এবং ১৯৬৮ সালের চ্যাম্পিয়ন আজুরিদের (Italy national football team), ঘরের মাঠে ইউরো কাপ (UEFA EURO 2020) ঘরে আনতে।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.