অপ্রতিরোধ্য ইতালি; দুর্দান্ত লড়াই করে অতিরিক্ত সময়ে হার মানলো অস্ট্রিয়া

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

ইতালি গ্রুপ-এ তে প্রথম হয়ে শেষ ১৬ তে মুখোমুখি হয়েছিলো গ্রূপ -সি তে দ্বিতীয় অস্ট্রিয়ার। অতিরিক্ত সময়ের গোলে ২-১ কে জয়ী হলো ইতালি।

টানা ৩০ টি খেলায় অপরাজেয় থেকে আর টানা ১১ টি খেলায় জয়লাভ করে গ্রূপের খেলায় এককথায় দুর্দান্ত খেলে শেষ ১৬ তে এসেছিলো ইতালি (Italy national football team)। প্রথম দুটো খেলায় ৩-০ জিতে যাবার পর ইতালির প্রশিক্ষক মানচিনি (Roberto Mancini) শেষ ম্যাচে দলে ৮ টি পরিবর্তন করে অনেক খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছিলেন । তার পরেও তার দল অনায়াসে ১-০ তে বিজয়ী হয়েছিলো। এই খেলায় অবশ্য ইতালি কোচ মানচিনি প্রথম দুটো খেলায় দলকেই নামিয়েছিলেন । খালি আজ রক্ষণে দলে ছিলনা অভিজ্ঞ চেলিনি (Giorgio Chiellini)। তবে মাঝমাঠে শুরু করলেন ওপর অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ভেরাট্টি (Marco Verratti)।

অপরদিকে শেষ খেলায় ইউক্রেনকে (Ukraine national football team) ১-০ হারিয়ে প্রথমবার ইউরোর (UEFA EURO 2020) নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল অস্ট্রিয়া (Austria national football team)। প্রবলতর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রক্ষণত্মক খেলবে তারা এটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে সবাইকে অবাক করে রক্ষনাত্বক খেলেনি অস্ট্রিয়াকে। একাধিক জায়গায় খেলতে পারা বায়ার্নের (Bayern Munich) প্রাক্তন তারকা ডিফেন্ডার আলাবাকে (David Alaba) লেফট ব্যাকে শুরু করেন। সুযোগ পেলেই বার বার ওপরে উঠে আক্রমণকে সাহায্য করার চেষ্টা করছিলেন তিনি।

প্রথমার্ধের প্রথম ২০ মিনিট সমানে সমানেই লড়াই হয় দুই দলের। ১৮ মিনিটে লিপজিগের (RB Leipzig) খেলোয়াড় সাবিৎজের (Marcel Sabitzer) মাঝমাঠ থেকে একটা দারুন বল বাড়িয়েছিলেন ২ জন ডিফেন্ডারের মধ্যে দিয়ে ফাঁকায় দৌড়ানো অর্নাতোভিচের উদ্দেশ্যে (Marko Arnautović)। সঠিক ভাবে বলটি ধরে গোলে রাখতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো অস্ট্রিয়া।

পরবর্তী সময় আস্তে আস্তে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইতালি। তবে অস্ট্রিয়া একেবারেই স্বাভাবিক খেলা খেলতে দেয়নি ইতালিকে। ইতালি মাত্র দুটো পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিলো প্রথমার্ধে। ১৭ মিনিটে স্পিনাজ্জোলার (Leonardo Spinazzola) বা দিক থেকে রাখা বলে বারেলা (Nicolò Barella) শট দুর্দান্ত ভাবে বাঁচান অস্ট্রিয়ান গোলকীপার। ৩২ মিনিটে ইম্মোবিলের (Ciro Immobile) বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটটি অবশ্য বাচানোর সুযোগ ছিলো না। বারে লেগে গোল হয় নি।

ষ্টার অফ দ্য ম্যাচ স্পিনাজ্জোলা

ইনসিগনে (Lorenzo Insigne) আর স্পিনাজ্জোলার যুগলবন্দী বার বার বা দিক থেকেই চেষ্টা করছিলো গোলের মুখ খোলার। সারা প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক ভালো খেলা স্পিনাজ্জোলা আজো ডিফেন্স থেকে উঠে এসে আক্রমণভাগকে যোগ্য সহায়তা দিয়ে গেলেন। তবে ডান প্রান্ত থেকে মূলত বেরারদির (Domenico Berardi) ব্যার্থতায় কোনো আক্রমণই তৈরি হয়নি। এরসাথে মাঝমাঠে ম্যানুয়েল লোকাতেলির (Manuel Locatelli) জায়গায় নামা ভেরাট্টিও মাঝমাঠে বেশ নিষ্প্রভ ছিলেন।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলার দখল আরো বেশি চলে যায় অস্ট্রিয়ার কাছে। আরো আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে থাকে তারা। পর পর বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেন সাবিৎজের, আলাবারা । আলাবাকে অনেক বেশি উঠে আস্তে দেখা গেলো এই সময়। ৫০ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে আলাবার ফ্রি কিক গোলে থাকলে বা ৬২ মিনিটে সাবিৎজের নেওয়া শট বনুচির গায়ে লেগে গোলে ঢুকে গেলে কিছুই বলার ছিলোনা। ৬৪ মিনিটে আলাবার হেড থেকে বল পেয়ে অর্নাতোভিচের হেড গোলে ঢুকলেও অস্ট্রিয়াকে হতাশ করে অফসাইডের জন্য বাতিল হলো গোল।

ম্যাচ হারলেও প্রশংসা পেল অস্ট্রিয়ার চোয়ালচাপা লড়াই

খেলায় ফেরার জন্য এরপর মাঝমাঠে একাধিক পরিবর্তন করতে বাধ্য হন ইতালি কোচ। ৬৭ মিনিটে লোকাটলিকে নামান ভেরাত্তির জায়গায়। বসিয়ে দেওয়া হয় বারেলাকেও। লোকাটলিকে নামায় মাঝমাঠে খানকিটা উন্নতি হয় ইতালির খেলায়। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি হয়। প্রতিপক্ষ বক্সের বাইরে ভালো পাস খেলা শুরু করেন লোকাটলি, ইম্মোবিলে আর স্পিনাজোলারা। ৮২ মিনিটে সেই স্পিনাজোলা বা দিক থেকে বক্সের ভেতরে ঢুকে সুন্দর বল বাড়ান দ্বিতীয় পোস্টার উদ্দেশ্যে। বেরারদি ভলি গোলে রাখতেই পারেননি। নির্ধারিত সময়ের শেষ ৫ মিনিটে আক্রমণভাগের দুই খেলোয়াড় ইম্মোবিলে এবং বেরারদিকে পরিবর্তন করে বেলোত্তি (Andrea Belotti) আর কিএসা (Federico Chiesa) নামায় ইতালি । নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় গোল শূন্য ভাবে।

শেষমেষ অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে পরিবর্ত খেলোয়াড়রাই গোল করে এগিয়ে দেয় ইতালিকে। ৯৫ মিনিটে সেই স্পিনাজোলা বা দিক থেকে দ্বিতীয় পোস্টে ফাঁকায় থাকা কিএসাকে বল বাড়ালে গোল করতে ভুল করেননি তিনি (১-০)। ডান পায়ে বল ধরে প্রথম টাচে বা পায়ে নিয়ে খুব কাছ থেকে গোল করে যান তিনি। তবে এক্ষেত্রে কিএসাকে আলাবার মার্ক করা উচিত ছিল । গোল করা ছাড়াও বাকি সময়টাও বেশ ভালো খেললেন কিএসা। এরপর ১০৫ মিনিটে জটলার মধ্যে থেকে বল পেয়ে দলের দ্বিতীয় গোল করে যান বারেলার জায়াগায় পরিবর্ত নামা পেসিনা (Matteo Pessina) (২-০)। এই নিয়ে পর পর দুটি খেলায় গোল করলেন পেসিনা।

অতিরিক্ত সময়ে জয়সূচক গোল করে নায়ক পেসিনা

দুই গোল খেয়েও হারিয়ে যায়নি অস্ট্রিয়া। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের জন্য ঝাঁপিয়ে পরে তারা। শুরুতেই সচাউবের (Louis Schaub) শট আটকান ইতালির গোলকীপার জিয়ানলুইগি ডোনারুমা (Gianluigi Donnarumma)। শেষে ১১৪ মিনিটে একটি গোল শোধ করেন অস্ট্রিয়ার পরিবর্ত খেলোয়াড় কালাইডিচ (Sasa Kalajdzic)। কর্নার থেকে বল পেয়ে দুরহ কোন থেকে হেড দিয়ে গোল করে যান দীর্ঘদেহী এই অস্ট্রিয়ান স্ট্রাইকার (২-১)। একটু পরেই আরেক পরিবর্ত গ্রেগোরিছের (Michael Gregoritsch) থেকে বক্সের মধ্যে অত্যন্ত সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও সাবিৎজের ব্যর্থ না হলে খেলা ট্রাইবেকারে গড়াতো।

ইউরোতে নিজেদের সেরা খেলা খেলেও ইতালির রিজাৰ্ভ বেঞ্চের কাছে হেরে গেলো অস্ট্রিয়া। খানিকটা ভাগ্যের সহায়তা পেলে হয়তো জিতে অঘটন ঘটাতে পারতো তারা।অন্যদিকে প্রতিযোগিতার অন্যতম শক্তিশালী এবং ভারসাম্যপূর্ণ দল ইতালির খেলায় আজ অন্যদিনের মতো বুদ্ধিদীপ্ত পাসিং আর আক্রমণে বৈচিত্র্য দেখা যায়নি।

তবে যে কোনো প্রতিযোগিতা জেতার জন্য সব খেলা ভালো খেলার চেয়েও বেশি দরকার দলের গভীরতা এবং কঠিন খেলা বের করার মতো মানসিকতা। তুলনামূলক কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ইতালি দল এই দুটির যথার্থ প্রমান দিয়ে এই খেলা বের করে নিয়ে গেলো। তারকানির্ভরতা নয় দলগত সংহতিই এই দলের প্রধান শক্তি। তাই আজকের খেলায় উপভোগ্য ফুটবল উপহার না দিতে পারলেও এই ইতালি এখনো নিঃসন্দেহে প্রতিযোগিতা জেতার দাবিদার। কোয়াটার ফাইনালে বেলজিয়াম বা পর্তুগালের মুখোমুখি হতে চলেছে ইতালি। এই খেলা থেকে আত্মবিশ্বাস নিয়েই কোয়াটারে নামবে ইতালি।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.