ডায়মন্ড বধের সেই ম্যাচ

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

১৩ই জুলাই, ১৯৯৭… তখন ক্লাস সেভেনের ল্যালা ক্যাবলা ছাত্র, তাও আজকের যুগে একটি সুশিক্ষিত অংশের কাছে প্রায় “ব্রাত্য” হয়ে যাওয়া বাংলা মাধ্যমের, ১৯৯৬ এর বিশ্বকাপের সৌজন্যে,আরো বলতে গেলে ইডেনে সেমিফাইনালে আগুন জ্বলার “সৌজন্যে”ক্রিকেট টা প্রায় মাথায় বসে গেছে, কিন্তু ভারতীয় তথা বাংলা ফুটবলটা তখনো বাকি ছিলো, যদিও প্রথম যুবভারতীতে যাওয়া ক্লাস থ্রি তে, মায়ের হাত ধরে, হ্যা ঠিক ই বললাম, আমার “মা” (আমার জীবনে দেখা সেরা ইস্টবেঙ্গল সমর্থক) যে আমায় প্রথম বড় ম্যাচ এ নিয়ে গেছিলো, এখনো মাথায় ভেসে ওঠে সেদিনের ৩ টে নাম….অর্পন দে, বিকাশ পাজি এবং সেই স্পেশাল মানুষ টা অর্থাৎ কৃশানু দে,, তারপর এলো সেই দিনটা, মিডিয়া এখনকার মতো শক্তিশালী না থাকায় খুব আগের থেকে কোনো কিছুই জানা জেতোনা, একমাত্র ভরসা ছিলো দূরদর্শনের সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার স্থানীয় সংবাদ, যেটা তখন একটা উৎসবের মতো ছিলো,সবাই একেবারে হামলে পড়তো, যাইহোক, ওই সোর্স থেকেই হয়তো প্রথম তাপ লাগা শুরু, সাথে ছিলো মায়ের এক্সাইটমেন্ট, যেটা দ্বিগুণ বেড়ে গেলো ম্যাচ টেলিকাস্ট দেখানোর খবর পেয়ে, যতদূর মনে পড়ে ম্যাচটা ছিলো দুপুর বেলা, যুবভারতীর খুব কাছেই বাইপাসের সন্নিকটে থাকার দরুন সেইদিনের সেই বাইচুং বাইচুং আর চিমা চিমা নামের স্লোগানযুক্ত ” সুনামী” টা প্রত্যক্ষ করেছিলাম দারুন ভাবে, ঠিক ১২.৩০ কি ১ টা নাগাদ আমাদের ই বাড়ির পাশ দিয়ে ছেলে আশিস দত্তের স্কুটারে করে যেতে দেখেছিলাম অমল দত্ত কে, সেই ট্রেড মার্ক মেরুন হাফ হাতা গেঞ্জি পরা, ও বলা হয়নি,ততদিনে মোটামুটি পিকে বনাম অমলের “পলাশীর যুদ্ধ” সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, আর আমার মায়ের সৌজন্যে অলরেডি ওই বয়েসেই প্রোপোস করে বসে আছি সেদিনের পিকে বাবুর দলটিকেই, না তখনো প্রেম কিন্তু হয়নি, যথারিতি সন্ধ্যে বেলা টিউটরের হোমওয়ার্ক শিকেয় তুলে বসলাম আমাদের প্রায় ইংলিশ পিরিওডের “সাদা কালো” বোকা বাক্সটার সামনে, শুরু হলো কমেন্ট্রি (কে বলছিলেন এখন আর মনে নেই),কতগুলি নাম প্রথম এলো কানে, অমিতাভ,সত্যজিৎ,ইলিয়াশ,খালেক,অমিত,হেমন্ত,সোসো তৎসহ চিমা ও বাইচুং ও তার সাথে ওমেলো আর দীর্ঘকায় এজেন্ডা, আজ ও স্মৃতির পাতায় অমলিন সেই দৃশ্য পট, চারিদিকে শুধু কালো কালো মাথা, তিল ধারনের জায়গাও নেই, এরই মাঝে নাজিমুলের দুরন্ত গোল আর সাথে আমার মায়ের লাফালাফি, বুঝলাম, প্রেম টা মনে হয় চাগাড় দিচ্ছে, তারপর সেই বাইচুং সোসোর “লায়লা/আয়লা/ফনি/শনি” যা যা আছে সব, পুরো বুল্ডোজার চালিয়ে দিলো সেদিনে ফেবারিট হিসাবে শুরু করা মাচাদের (তখন ভদ্র ব্যবহার করতাম,মাচা ডাকতাম না🤣).যদিও সেদিন চিমা একটা অসাধারন গোল দিয়েছিলো, কিন্তু থামাতে পারেনি প্রদীপ বাবুর ভৈরব বাহিনীকে, অমল দত্তর সেদিনের চুংচুং ভারতীয় ফুটবলে সেদিন জানান দিয়েছিলো “I m coming Indian Football, I am coming”… কত্ত রাত পর্যন্ত সেদিন বাইপাস জ্যাম ছিলো, আমাদের লোকাল ক্লাব লালহলুদ লাইটে ভরে গেছিলো পুরো…আজও ভাসে চোখে, কি উন্মাদনাটাই না প্রত্যক্ষ করেছিলাম সেইদিন…

আর হ্যা, আমার প্রপোসাল গ্রহন করে ইস্টবেঙ্গল আজ আমার রানী এলিজাবেথ, ইস্টবেঙ্গল আজ আমার ফ্লোরেন্স নাইটএংগেল, ইস্টবেঙ্গল ই আজ আমার মোনালিসা,ম্যাডোনা, আজ আমাদের সুখী সংসার,… হেরে গেলে একটু কষ্ট হয় বাট ভালোবাসাও প্রচুর

League Table

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.