বর্তমান বাংলাদেশের পূর্বাংশ চট্টগ্রাম ও আরাকান অঞ্চল প্রাগৈতিহাসিককাল থেকেই ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। চট্টগ্রামের রয়েছে বহু প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য, কিংবদন্তি এবং উত্তরাধিকার। প্রাচীন তিব্বতি সূত্র থেকে প্রাপ্ত অঞ্চলটির নাম ছিল ‘জ্বালনধারা’, অর্থাৎ তপ্তজল-সমন্বিত অঞ্চল। অন্যদিকে সিন্ধু থেকে আগত সিন্ধ বৌদ্ধযোগী বালপাদের অন্য নাম ছিল জ্বালন্ধরী, অর্থাৎ জ্বালন্ধরানবাসী। বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি, প্রাচ্যের রাণী বীর প্রসবিনী, আধ্যাত্মিক রাজধানী, বন্দরনগরী, আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী, কল্যাণময় নগরী এমন অসংখ্য নামে পরিচিত এই চট্টগ্রাম। এই অঞ্চলের নামের উৎস খুঁজতে গিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। বুদ্ধধর্মাবলম্বীদের ভাষ্য, চৈতকিয়াং কিংবা চৈতাগ্রাম, চৈতার অর্থ হলো বুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, সেই থেকে সম্ভবত এই অঞ্চলের নাম চট্টগ্রাম। হিন্দুমতে চট্টগ্রামের আদি নাম ছিল চট্টল। মুসলমান শাসক অধিগ্রহণের পরে সে নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো চাটিগাঁও। মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে অর্থাৎ চাটি জ্বালিয়ে পীর বদর শাহ অশুভ প্রেতাত্মাদের তাড়িয়েছিলেন বলে এই নাম। স্যার উইলিয়াম জোন্স অনুমান করেছেন যে এই জায়গায় একটি অনন্যসুন্দর পাখি দেখা যেত; একটি দুটি নয়, ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেত। পাখিটির নাম ‘ছাতগ’। সেই থেকে বোধ করি চাটিগাঁ। চট্টগ্রামের প্রায় ৪৮টি নামের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রম্যভূমি, চাটিগাঁ, চাতগাও, রোসাং, চিতাগঞ্জ, জাটিগ্রাম, আদর্শদেশ, চট্টল, চৈত্যগ্রাম, সপ্তগ্রাম, পেন্টাপোলিস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার মত চট্টগ্রাম জেলার জাতীয় ভাষা ‘বাংলা’ হলেও এ জেলার একটি নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষা রয়েছে, যেটি ‘চাঁটগাঁইয়া ভাষা’ নামে পরিচিত। এ ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার অধিকাংশ লোক এ ভাষায় কথা বলে। চট্টগ্রাম জেলা নানান লোকসংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধ্যায়ে নব উন্মেষ পর্বের অগ্রপথিক ছিলেন ড. অন্নদাচরণ খাসত্মগীর, কবি নবীন সেন, যাত্রামোহন সেন, কমলাকান্ত সেন, দুর্গাদাস দস্তিদার, ডা. রামকিনু দত্ত, বেণীমাধব দাশ (বেণী ব্রাহ্ম), শরচ্চন্দ্র দাশ, নলিনীকান্ত সেন, প্যারীমোহন চৌধুরী, কবিগুণাকর নবীনচন্দ্র দাশ (সেন), শশাঙ্কমোহন সেন, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, কে. কে. সেন, পি. কে. সেন, প্রসন্নকুমার রায়, কালীশঙ্কর চক্রবর্তী, কবি বিপিন নন্দী, হামিদ আলী, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, মুহম্মদ এনামুল হক, আবুল ফজল, বুলবুল চৌধুরী, মুহম্মদ ইউনুস, বৌদ্ধ বিধায় বেণীমাধব বড়ুয়া, জ্যোতিপাল মহাথের, সংগীতশিল্পী সৌরীন্দ্রলাল দাশগুপ্ত, রমেশ শীল প্রমুখ। বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা নগেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, বিপ্লবী গিরিজাশঙ্কর চৌধুরী, স্বদেশি আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব চারুবিকাশ দত্ত, নির্মল সেন, অনন্ত সিংহ, শহিদ প্রমোদরঞ্জন চৌধুরী, মাস্টারদা সূর্য সেন, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, অমরেন্দ্র নন্দী, অর্ধেন্দু দস্তিদার, কুমুদিনী দাস (খাসত্মগীর), সাবিত্রী দেবী, ইন্দুমতী সিংহ, কল্পনা দত্ত (যোশী), নেলী সেনগুপ্তা, বীণা দাস, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ।
উনিশ শতকে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের ভিত্তিভূমিকে প্রায় অস্থিতিশীল করে দিয়েছিল ঐতিহাসিক সিপাহি বিদ্রোহ। সেই বিদ্রোহের ঢেউ চট্টগ্রামে কোম্পানির সিপাহিদের মাঝেও এসে লাগে। ১৮৫৭ সালের ১৮ ই নভেম্বর, চট্টগ্রামের দেশীয় পদাতিক কোম্পানির সিপাহিরা রজব আলী নামে এক হাবিলদারের নেতৃত্বে এই মহা বিদ্রোহে অংশগ্রহন করে। তারা ট্রেজারি থেকে অর্থ, অলঙ্কারসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুন্ঠন করে নেয়। জেলখানা ভেঙ্গে কয়েদিদের মুক্ত করে এবং অস্ত্রাগারে আগুন লাগিয়ে দেয়। চট্টগ্রামের বিদ্রোহী সিপাহিদের ঢাকার দিকে অগ্রসর সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার কম্পানি কতৃপক্ষ আত্মরক্ষামূলক ব্যাবস্থা হিসাবে ঢাকার কোষাগার ও লালবাগে অবস্থানরত দেশি সিপাহিদের নিরস্ত্র করে এবং বিদ্রোহী সিপাহিদের প্রতিরোধকল্পে সশস্ত্র সৈন্যদল প্রেরন করে। পথিমধ্যে ইংরেজ বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী সিপাহিদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে বিদ্রোহী সিপাহিরা শেষ পর্জন্ত ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এইভাবেই ১৮৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে এই সাড়া জাগানো বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে।
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল কেবল চট্টগ্রাম বা বাংলা নয়, ভারত ইতিহাসেরই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ১৯৩০-এর এই বীরত্বপূর্ণ ঘটনায় স্তম্ভিত হয়েছিল ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষ। অসহযোগ আন্দলনের পরে মাস্টারদা সূর্য সেন ও আম্বিকা চক্রবর্তী চট্টগ্রামের দেওয়ানজি পুকুর পাড়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘সাম্য আশ্রম’। এই আশ্রমে এসে গোপন সভায় বিপ্লবী সদস্যরা মিলিত হতেন। সূর্য সেনের নেতৃত্বে পরিচালিত বিপ্লবী দলটিই পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিপ্লবী আন্দলনের ইতিহাসে এক অনন্য ভূমিকা পালন করে। বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিপ্লবী কর্মকান্ড চালান, ১৯২৩ সালে রেল কোম্পানিতে ডাকাতি করে ২৩ হাজার টাকা লুট করেন স্বদেশের কাজে ব্যয় করার জন্য, ১৯২৪-এ কলকাতার পুলিশ কমিশনার টেগার্টকে হত্যার ব্যর্থ প্রয়াস নেন। মাস্টারদার জোরালো অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণেই ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল কার্যকর হয়নি চট্টগ্রামে। ১৯৩০ সালে কংগ্রেসের আহ্বানে আইন অমান্য আন্দোলন মাস্টারদার দলের পক্ষে সুযোগ সৃষ্টি করে। অনন্ত সিং, গনেশ ঘোষ প্রমুখ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা তরুণদের অস্ত্র চালনা শিক্ষা এবং অস্ত্র সংগ্রহের জন্য তৎপর হয়ে উঠেন। এপ্রিল মাসে গোপনে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি গঠিত হয় এবং বিপ্লবীরা সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মতে ১৮ এপ্রিল বিদ্রোহের ঘোষণা পত্র জারি করা হয়। এই তারিখের রাত্রেই তাঁরই নেতৃত্বে ও নির্দেশে প্রায় একই সঙ্গে বিপ্লবীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ধূম স্টেশনে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা, টেলিফোন ভবন আক্রমণ, পুলিশ অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, অক্সিলিয়ারী অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ প্রভৃতি সংঘটিত করে। এ সকল আক্রমণ পরিচালনার পর বিপ্লবীরা উত্তর দিকে অবস্থিত জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। ২২ এপ্রিল সরকারি সৈন্য জালালাবাদ পাহাড় আক্রমণ করলে বিপ্লবীদের সাথে ইংরেজদের সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জালালাবাদ সংঘর্ষের পর মাস্টারদার নির্দেশে বিপ্লবীরা নূতন রণ কৌশল গ্রহণ করেন। সেই থেকে ১৯৩৩ এর ১৬ই ফেব্রুয়ারি ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত কিভাবে ইংরেজ শাসককে পর্যুদস্ত করেছেন সে বৃত্তান্ত আছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। ১৯৩৪ সালের ১২ ই জানুয়ারি চট্টগ্রামের এই স্মরণীয় এবং সফল বিদ্রোহের নেতা মাস্টারদা সূর্য সেন ও তারকেশ্বর দত্তকে চট্টগ্রাম জেলে ফাঁসি দিয়ে তাদের মৃতদেহ বঙ্গপসাগরে সলিলসমাধি দেওয়া হয়। তাঁকে শেষ করেও দেশজোড়া বিদ্রোহের আগুন নেভাতে পারেনি ব্রিটিশ সরকার। সাগরের অতল-তলে শুয়ে সম্ভবত শুধু হেসেছেন মহাবিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন।
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম। পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। তাই চট্টগ্রাম জেলাকে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে ডাকা হয়। চট্টগ্রাম জেলা দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; শহর থেকে প্রায় ১৬ কিমি দূরে পতেঙ্গা সীবিচ। চট্রগ্রাম শহরেই অবস্থিত ফয়’স লেক। চট্রগ্রাম শহরেই বহদ্দারহাটে অবস্থিত স্বাধীনতা কমপ্লেক্স। সংসদ ভবন, লালবাগ কেল্লা, কান্তজীর মন্দির,আহসান মঞ্জিল, জাতীয় স্নৃতিসৌধ একই জায়গায়। ওয়ার সেমিট্রি চট্রগ্রাম শহরেই অবস্থিত দ্বিতীয় মহাবিশ্বযুদ্ধে মারা যাওয়া প্রায় ৭১৫ জন মানুষ শুয়ে আছেন এখানে। বাটালি হিল উঠে উপভোগ করা যায় একই সাথে পাহাড় ও চট্রগ্রাম শহর। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ওই দূরে সমুদ্রটাও দেখা যায়। চট্রগ্রাম শহর হতে ৩১ কিমি দূরে চট্রগ্রাম-ঢাকা হাইওয়েতে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ইকো পার্ক। এখানে দুটি ঝর্না আছে। একটি সহস্রধারা ও অপরটি সুপ্তধারা। বর্ষাকালে ঝর্নার মনমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। ইকোপার্কের পাশেই চন্দ্রনাথ পাহাড়।পাহাড়ের চূরায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির ও তার নিচেই অবস্থিত শিব মন্দির। চট্রগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিমি দূরে ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ে থেকে ৩ কিমি পশ্চিমে সমুদ্রের উপর কুমিরা ফেরি ঘাট অবস্থিত। বিকেল বেলা কাটানোর অসম্ভব সুন্দর জায়গা। চট্টগ্রাম থেকে ৫৮ কিমি দূরে কাপ্তাই লেক। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪০ মিনিটের পথ সীতাকুণ্ড। সীতাকুণ্ডে সহস্রধারা ও শত সহস্রধারা নামে দুটো অসাধারন ঝর্না রয়েছে। ১ ঘন্টার দুরত্বে রয়েছে মিরসরাই মহামায়া লেক। এই প্রাকৃতিক লেক বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে রয়েছে অসাধারন পাহাড়ি গুহা ও ঝর্না। বোটে করে পুরো লেক ঘুরতে হয়। মিরসরাই অঞ্চলে সবচেয়ে সহজ ও সুন্দর ট্রেইল হলো হরিনমারা ট্রেইল। ঝর্নার জল খেতে আসা হরিন শিকার করা হত বলে এর নাম হরিনমারা ট্রেইল। কাপ্তাই লেককে বলা হয় বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর হ্রদ। এ যেন অথৈ জল ও সবুজে পরিপূর্ণ বৈচিত্র্যের এক সমাহার। রাঙামাটি শহরের এই হ্রদের সঙ্গে পাহাড়ের অকৃত্রিম সহাবস্থান এককথায় অতুলনীয়। এখান থেকেই ঘুরে নেওয়া যায় ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক মহামুনি বৌদ্ধ বিহার।
সারি সারি ঝাউবন, বালির নরম বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র। কক্সবাজার গেলে সকালে-বিকেলে সমুদ্রতীরে বেড়াতে মন চাইবে। নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের নাম কক্সবাজার। অপরূপ সুন্দর বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে। ইংরেজ অফিসার ক্যাপ্টেন কক্স ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে এখানে একটি বাজার স্থাপন করার পর থেকে জায়গাটির নাম হয়ে যায় কক্সবাজার। বিশ্বজোড়া মানুষের কাছে কক্সবাজার সুপরিচিত পৃথিবীর সবচাইতে লম্বা অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত হিসেবে। প্রায় ১২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকত প্রকৃতির এক অপূর্ব উপহার। সমুদ্রের পুরো রূপ উপভোগ করতে হলে অবশ্যি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়টুকু বিচে কাটানো উচিৎ। কক্সবাজার ভ্রমণে গিয়ে পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ থাকে সাগরের বিভিন্ন মাছের মেন্যুর প্রতি। বিশেষ করে চিংড়ি, রূপচাঁদা, লাইট্যা, ছুরি মাছসহ মজাদার শুটকি মাছের ভর্তার প্রতিই পর্যটকদের আকর্ষণ বেশি থাকে। স্কুইড, কাঁকড়া, লবস্টার অফুরন্ত মেলে। কক্সবাজার থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের দুরত্ব প্রায় ১১০ কিমি। কক্সবাজার থেকে প্রথমে টেকনাফ, টেকনাফ থেকে সি-ট্রাক, জাহাজ কিংবা ট্রলারে চড়ে সেন্টমার্টিনে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। সুনীল আকাশের সাথে চোখে প্রশান্তি ও মুগ্ধতা এনে দেওয়া দিগন্ত-বিস্তৃত নীল জলরাশি, সৈকতজুড়ে সারি সারি কেয়াবাগান, ঝাউগাছ, নারিকেল গাছ, শৈবাল, নুড়ি, পাথর, ঝিনুক আর প্রবালের বর্নময় একটি মনোরম দ্বীপের নাম সেন্টমার্টিন। স্থানীয়রা যাকে নারিকেল জিঞ্জিরা বলেও সম্বোধন করে থাকে। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বাড়ি সমুদ্রবিলাসের সামনে কিছু দোকান আছে, সেখানে শুটকি, বার্মিজ আচার ও নানা ধরনের শৌখিন জিনিষপত্র পাওয়া যায়। সেইসাথে সমুদ্রের তাজা মাছ, কাঁকড়া ভাজা ও মাছের বারবিকিউ হয়। বিচে বসে মাছ, কাঁকড়া ও বারবিকিউ খাওয়ার মজাই আলাদা। সুন্দরী, টোনা, কোরাল, রূপচাঁদা, ইলিশ, কালাচাঁদা, কাচকি, স্যালমনসহ হরেক রকমের শুঁটকি মাছের ভান্ডার।
চট্টগ্রামের খাদ্য জগতে বিখ্যাত নাম হলো মেজবানি মাংস। এছাড়া শুঁটকি, বাকরখানি, দুরুস কুরা – এই তালিকাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
One Comment
Darun