SC East BengalChennaiyin FC
December 26, 2020
2 - 2Full Time |
ইষ্টবেঙ্গল টিম নিয়ে ওঠা দুটো অমোঘ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেল ক্রিসমাসের ঠিক পরের দিনের চেন্নাই ম্যাচ। প্রথম এবং সবচে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটা ছিলো টিমে সেটপিস কোচের আদতে ভূমিকাটা কি? সেটপিস থেকে আচমকা গোল না খেলেও সেটপিস থেকে গোল আসছিলোও না। হায়দ্রাবাদ ম্যাচে মাঘোমা আর আজ স্টেইনম্যানের হেড থেকে গোল আর নেভিলের হেড থেকে গোলমিস ছাপ রেখে গেল সেটপিস কোচের ভূমিকার। দ্বিতীয় প্রশ্নটা ছিলো নেভিলের মতো আনফিট অফকালার একটা খেলোয়াড়কে প্রতি ম্যাচে বয়ে বেড়ানোর কারন কি? এই প্রথম নেভিল ইষ্টবেঙ্গল ডিফেন্সে ঠিকঠাক পজিশনে থেকে ঠিকঠাক কাজটা করে গেলেন।ছাংতে আর রহিম আলীর দুটো গোলের পেছনে এই প্রথম স্কট নেভিলের কোনরকম ভুলভ্রান্তি ছিলো না।চেন্নাই ফরোয়ার্ডদের বেশ কয়েকটি সাজানো আক্রমনের মাঝে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমন নষ্ট তো করলেন ই, সাথে নির্ভুল পাস বাড়িয়ে পাল্টা আক্রমনের সূচনা করে চেন্নাইকে ম্যাচের রাশ পুরোপুরি কুক্ষিগত করতে দিলেন না।
টুর্নামেন্টের সাতটি ম্যাচ খেলে ফেলার পরেও কোন ম্যাচ থেকে পুরো তিন পয়েন্ট না তুলতে পারলেও ডিফেন্সে ড্যানি ফক্স চোট সারিয়ে ফেরার পর রবার্ট ফাওলারের টিমকে আগের তুলনায় অনেকটাই সংগঠিত দেখাচ্ছে। ফিটনেসে মারাত্মক উন্নতি নজরে না এলেও আগের ম্যাচের মতো ম্যাচের শেষলগ্নে পুরো টিম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল খাবার মতো কিছু ঘটেনি চেন্নাইয়ের সাথে। বরং ম্যাচ শেষ হয় চেন্নাইয়ের বক্স থেকে বল ক্লিয়ার হবার পর। ম্যাচের শেষ লগ্নেও আক্রমন শানিয়ে কর্নার আদায় করে নেয় ফাওলারের ছেলেরা। স্কট নেভিলের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে সান্তার উপহার হিসাবে তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ থেকে ফিরতে পারতো ফাওলারের ছেলেরা।
CAPTAIN SPEAKS🗣️: Our skipper Danny Fox reflects on our hard-fought draw against @ChennaiyinFC tonight.#SCEBCFC #ChhilamAchiThakbo #WeAreSCEB #JoyEastBengal pic.twitter.com/rLoT2vPeFe
— SC East Bengal (@sc_eastbengal) December 26, 2020
অথচ এমনটা হবার কথা ছিলো না। দুবারের চ্যাম্পিয়ন ও গতবারের রানার্স চেন্নাই এবারের আইএসেলে ও ভালো খেলছে। বিদেশী মেমো, ক্রিভেলরো, সিলভেস্টারদের সাথে তাল মিলিয়ে অনিরুদ্ধ, রহিম আলী, ছাংতেরা বেশ জমাট আক্রমন গড়ে তুলছেন বেশ অনায়াসে। বিশেষ করে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সলাইন টপকে গোলের মুখ খোলার ব্যাপারটায় বেশ অভিনবত্ব দেখাচ্ছেন চেন্নাইয়ের আক্রমনভাগের খেলোয়াড়েরা। ছাংতের গতি আর রহিমের বুলডোজিং ক্ষমতার খুব সুন্দর ব্যবহার করছে চেন্নাই দলটা। আর এই পন্থাতেই চেন্নাইয়ের দুটো গোল এলো। প্রতিআক্রমনে ছাংতের পায়ে যখন বল পৌছালো, নিজের সর্বস্ব দিয়েও ইষ্টবেঙ্গলের সাইডব্যাক সুরচন্দ্র ছাংতেকে আটকানো তো দূর ওর ধারেপাশে অব্দি পৌছাতে পারেনি। গোলরক্ষক দেবজিত নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বলে পা ঠেকাতে পারলেও শেষরক্ষা হয়নি। এইসময়ে পুরো ম্যাচেই চেন্নাই আধিপত্য বিস্তার করে। দ্বিতীয় গোলের সময়েও ইষ্টবেঙ্গলের আরেক সাইডব্যাক বিকাশ জাইরু রহিম আলীর সাথে শারীরিক সক্ষমতায় পেরে না ওঠার জন্য ই চেন্নাই গোল করে বেরিয়ে যায়। এক পয়েন্ট পাওয়ার দিনেও সাইডব্যাকদের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ফাওলারের কপালে দুশ্চিন্তার রেখা বাড়াবে।বাকি সময়েও চেন্নাই আরো বেশ কিছু গোলের সুযোগ হারায় সিলভেস্টার, ক্রিভেলরো, ছাংতেদের নিশানা ঠিক রাখতে না পারার মাশুল হিসাবে ও ইষ্টবেঙ্গলের নেভিল-ফক্স জুটির তৎপরতায়।
ক্রিসমাসের ঠিক পরের দিন ই ইষ্টবেঙ্গলের বেশ কিছু খেলোয়াড় চেন্নাইয়ের খেলোয়াড়দের সামনে সাক্ষাৎ সান্তাক্লজ হিসাবে অবতীর্ণ হলেন। এদের মধ্যে সবার প্রথমে নাম আসবে মহম্মদ রফিকের। সারা ম্যাচ জুড়ে প্রত্যাশার চেয়েও বেশী পরিশ্রম করে চলেছেন রফিক। কিন্তু ধারাবাহিকতা ব্যাপারটা বরাবরের মতো এখনো রফিকের অপছন্দ। তাই কোনদিন দলের সাইডব্যাকের পজিশনে নেমে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিপক্ষকে রুখে দিচ্ছেন তো পরের ম্যাচেই প্রতিপক্ষের বক্সে সামান্য সেন্টার তুলতে পারছেন না। আগের দিন অনবদ্য শটে গোলের রাস্তা খুলে ফেলার পরেই আজ অসাধারন কায়দায় চেন্নাইয়ের ডিফেন্ডারদের অফসাইড ট্র্যাপ কাটিয়ে চেস্ট ট্র্যাপে বল মাটিতে নামিয়ে গোলরক্ষক বিশাল কেইথকে ধরাশায়ী করেও ফাঁকা গোলে বল পাঠাতে পারলেন না। গোলটা হলে ম্যাচের স্কোরকার্ড অন্যরকম হতো।বরং আইএসেলের একমাত্র জার্মান খেলোয়াড় মাত্তি স্টেইনম্যান খেলার গতির বিরুদ্ধে দুবার গোল করে ইষ্টবেঙ্গলের এক পয়েন্ট নিশ্চিত করলেন। সেই সাথে গোটা ম্যাচে বেশ কিছু মিসপাস ও করলেন। রফিকের পর মাঘোমা ও সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করে চেন্নাইয়ের সান্তাক্লজ হিসাবে অবতীর্ণ হলেন।আক্রমন ভাগের রফিক-মাঘোমা কে জোর টক্কর দিয়ে নিজেদের বক্সে ব্যাকপাস করে চেন্নাইয়ের জন্য গোলের বল সাজিয়ে দিলেন মিলন সিং।যদিও চেন্নাই সাজানো বল থেকে কাজের কাজটা আর করে উঠতে পারেনি।তবে এই সান্তাক্লজ সাজার প্রতিযোগিতা দ্রুত বন্ধ না হলে ইষ্টবেঙ্গলের আইএসেলে ভোগান্তি অব্যাহত থাকবে।
আজকের খেলা দেখার পর একটা ব্যাপার নিশ্চিত ফাওলারের টিমের সবচে বড় দুটো সমস্যা হলো একজন সঠিক স্ট্রাইকার যে গোলটা ঠিকঠাক চেনে তার অভাব আর দুটো সাইডব্যাকের ধারাবাহিক ব্যর্থতা। মাঘোমা-পিলকিংটন জুটি, সাথে রফিকের পরিশ্রম ও স্টেইনম্যানের সৃষ্টিশীল ফুটবলে অহরহ গোলের সুযোগ তৈরী হলেও বলবন্ত বা জেজে সেগুলিকে গোলে পরিনত করতে সম্পূর্ন ব্যর্থ। ফলস্বরূপ তিন পয়েন্ট মাঠে রেখে এক পয়েন্টেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে রবার্ট ফাওলারকে। জানুয়ারি তে ট্রান্সফার উইন্ডো খুলে গেলে বেশ কিছু পজিশনে ঠিকঠাক খেলোয়াড় নিতে না পারলে এই টিম নিয়ে বেশিদূর যাওয়া একেবারেই অসম্ভব। তবুও টিমের খেলায় প্রতিদিন ই অল্প অল্প উন্নতির ছাপ বেশ স্পষ্ট। এই উন্নতির হাত ধরেই পুরো তিন পয়েন্ট পাবার আশায় বুক বাঁধতেই পারেন ইষ্টবেঙ্গল সমর্থক রা।
Related
Results
Club | Goals | Outcome |
---|---|---|
SC East Bengal | 2 | Draw |
Chennaiyin FC | 2 | Draw |
Details
Date | Time | League | Season | Full Time |
---|---|---|---|---|
December 26, 2020 | 7:30 pm | Indian Super League | 2020 | 90' |
Ground
Tilak Maidan Stadium |
---|
Image Source: SC East Benga Twitter Page
One Comment
ভালো লেখা, পড়ে ভালো লাগলো।
আনন্দ পেলাম আমাদের এই দুঃখের দিনেও।
চালিয়ে যা ভাই উৎপল।