রবিবাসরীয় থ্রিলারে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে রুদ্ধশ্বাস জয় পেলো ডাচরা

Share

Facebook
Twitter
WhatsApp

[fblike]

ইউরো গ্ৰুপ সি-তে আমস্টারডামে রবিবার মুখোমুখি হয়েছিলো নেদারল্যান্ডস ও ইউক্রেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এখনো অব্দি ইউরোতে সবচেয়ে উপভোগ্য খেলা হলো এটাই।

যদিও ২০১৪-র পরে এই প্রথম নেদারল্যান্ডস কোনো বড়ো মঞ্চে খেলছে। খাতায় কলমে তারা নিঃসন্দেহে এই গ্ৰুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হলেও চোট আঘাতের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছাড়াই খেলতে এসেছে তারা। চোটের জন্য নেদারল্যান্ডস ডিফেন্সের প্রধান স্তম্ভ ক্যাপ্টেন ভ্যান ডাইকের (Virgil van Dijk) ইউরো-তে না থাকাটা বড়ো ধাক্কা। তার উপর করোনার জন্য প্রথম গোলকিপার জ্যাসপার (Jasper Cillessen) টিমে নেই। এছাড়া এই ম্যাচে জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার দে লিজিত-ও (Matthijs de Ligt) চোটের জন্য খেলতে পারেননি।

অপরদিকে দেশের প্রাক্তন তারকা শেভচেঙ্কোর (Andriy Shevchenko) কোচিংয়ে ইউক্রেন কোয়ালিফাইং রাউন্ডে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়ে পর্তুগালের উপর গ্ৰুপ সেরা হয়ে ইউরো খেলতে এসেছে। সেই হিসেবে এই দুটো টীমই পরবর্তী রাউন্ডে এ যাবার প্রবল দাবিদার।

দুটো টিমই ৩-৫-২ ছকে খেলা শুরু করে। খেলার শুরু থেকেই ডাচ দল প্রচন্ড আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিলো। খেলার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ডাচ টিমের কাছে ছিল। বাঁ দিক থেকে ডিপে (Memphis Depay) এবং ডানদিক থেকে ডামফ্রিস (Denzel Dumfries) বার বার বিপদে ফেলছিলেন ইউক্রেনের ডিফেন্সকে।

খেলার শুরুতেই ২ মিনিটের মাথায় মেমফিস ডিপে এবং ৫ মিনিটের মাথায় ডামফ্রিসের শট গোলকীপার না আটকালে শুরুতেই ইউক্রেন ২ গোলে পিছিয়ে পড়তে পারতো। এরপরে ৩৯ মিনিটে ইউক্রেনের গোলকিপার বুসচেন (Heorhiy Bushchan) দুরন্তভাবে ভাবে উইজনালদামের (Georginio Wijnaldum) শট বাঁচান। এর কিছুক্ষণ পরেই ডামফ্রিস পিছনের পোস্টে খুব কাছ থেকে ডিপে-র সেন্টার গোলে রাখতে ব্যর্থ হন। এইরকম একাধিক সুযোগ নষ্ট না হলে প্রথমার্ধেই নেদারল্যান্ডসের একাধিক গোলে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল।

ইউক্রেনের খেলা মূলত কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ছিল। এই ভাবেই প্রথমার্ধে অন্তত দুটো খুব ভালো সুযোগ ইউক্রেন পেয়েছিলো যেখান থেকে গোল হলে খেলা গতিপ্রকৃতি অন্যরকম হতেই পারতো। ডানদিক থেকে ইয়ারমলেঙ্কো (Andriy Yarmolenko) এবং ইয়ারেমচুকের (Roman Yaremchuk) যুগলবন্দীতে ৪৪ মিনিটে তারাও প্রায় গোলের মুখ খুলেই ফেলেছিলো। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষে কোনো পক্ষই গোল করতে পারে নি।

দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু আটকানো যায়নি ডাচদের। খুব তাড়াতাড়ি দুটো গোল করে এগিয়ে যায় তারা। দুবারই ডানদিক থেকে ডামফ্রিস সুযোগ তৈরি করেন। ৫২ মিনিটে ডামফ্রিসের নিচু ক্রস গোলকিপার বাঁচালে ফিরতি বলে দুরন্ত শটে গোল করে যান ডাচ অধিনায়ক উইজনালদাম (১-০)

প্রথম গোলের পর উইজনালদাম। ছবি সৌজন্যে: ইউরো ২০২০ অফিশিয়াল পেজ

৫৯ মিনিটের মাথায় ডামফ্রিস আবার ডানদিক থেকে ভেতরে ঢুকে আসলে সুযোগ চলে আসে ওয়াগহোর্স্টের (Wout Weghorst) কাছে। জটলার মধ্যে থেকে গোল গোল করতে ভুল করেননি তিনি (২-০)

এরপর খেলার রাশ নিজের কাছে নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে নেদারল্যান্ডস। মূলত মাঝমাঠে দখল নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু সেটা সফল হয় নি । ৬৫ মিনিটের পর আস্তে আস্তে মেমফিস ডিপে খেলা থেকে খানিকটা হারিয়ে যান। সে সময় ডাচদের আক্রমণও সেভাবে দানা বাঁধছিলো না। উল্টো দিকে ইউক্রেন গোল শোধের জন্য অনেকটা আক্রমণাত্মক খেলতে বাধ্য হয়।

৭৫ মিনিটেই তার ফলও পায় ইউক্রেন। আবার ডান দিক থেকে ইয়ারমলেঙ্কো এবং ইয়ারেমচুকের যুগলবন্দীতে পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে দুরন্ত বাঁকানো শটে গোল করে যান ইয়ারমলেঙ্কো। নিঃসন্দেহে এবারের ইউরোয় এখনও অব্দি সেরা গোল। ডাচ গোলকিপার মার্টিন স্টেকেলেনবার্গের (Maarten Stekelenburg) কিছু করার ছিল না। খেলায় ফিরে আসে ইউক্রেন (২-১)

চার মিনিট পরেই, অর্থাৎ ৭৯ মিনিটের মাথায় বাঁদিক থেকে মালিনোভস্কির (Ruslan Malinovskiy) ফ্রিকিক থেকে ভেসে আসা ক্রসে ইয়ারেমচুক হেডে গোল করে চলে যান (২-২)। ডাচ ডিফেন্সে অভিজ্ঞতার অভাব এক্ষেত্রে খানিকটা হলেও বোঝা গেলো। ইয়ারেমচুক যখন বক্সের মধ্যে হেড করছেন তখন তাঁর আশেপাশে পাঁচজন কমলা জার্সি থাকলেও একজনও মার্ক করলেন না তাঁকে।

দুটো গোল করার পর ইউক্রেন খানিকটা ডিফেন্সিভ চলে যেতেই আবার নেদারল্যান্ড আস্তে আস্তে খেলায় ফিরতে থাকে। এইসময় মাঝমাঠে অভিজ্ঞ প্লেয়ার দে জং কে (Frenkie de Jong) অনেকটাই দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখা গেলো। শেষ অব্দি ৮৫ মিনিটে নাথান একের (Nathan Aké) সেন্টারে হেডে গোল করে যান সেই ডেমফিস (৩-২)। অবশ্য এই গোলটির ক্ষেত্রে অনেকটাই দায়ী ইউক্রেনের গোলকিপার বুসচেন। তাঁর দুর্বল ক্লিয়ারেন্সের জন্যই বিপজ্জনক জায়গা থেকে সেন্টার করার সুযোগ এসেছিলো। খেলার শেষ অবধি এই স্কোর লাইন আর বদলায় নি। তবে যোগ্য দল হিসেবেই জিতলো নেদারল্যান্ডস।

কিন্তু এই খেলায় নেদারল্যান্ডসের জমাট মাঝমাঠ না থাকা আর ডিফেন্সের দুর্বলতা বার বার পরিষ্কার হচ্ছিলো। বিশেষ করে যখনই প্রতিআক্রমণে আসছিলো ইউক্রেন, তখনই ডিফেন্সের ফাঁকফোকর স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। পরবর্তী খেলা গুলোতে এই ব্যাপারটা নজর দিলে কিন্তু নেদারল্যান্ডস অনেক দূর অব্দি যেতে পারে।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.