আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ড্র করেও এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারে তৃতীয় রাউন্ডে ভারত

Share

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp

[fblike]

মঙ্গলবার ২০২২-এর কাতার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান আর ভারত। দুটো টীম আগেই বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জনের জন্য পরের রাউন্ডে যাওয়ার লড়াইয়ের বাইরে চলে গেছে। তবু দুপক্ষেরই লক্ষ্য ছিল গ্ৰুপে তৃতীয় হয়ে ২০২৩-এর এশিয়া কাপ যোগ্যতা অর্জনের তৃতীয় রাউন্ডে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন। তার জন্য ভারতের ড্র-ই যথেষ্ট ছিলো। খেলার আগে ভারতের প্রশিক্ষক স্টিমাচ অবশ্য বলেছিলেন ভারত জেতার জন্যই খেলতে নামবে।

কিন্তু মাঠের খেলা দেখে মনে হলো না সেটা। দুই স্টপার সন্দেশ ঝিঙ্গান (Sandesh Jhingan) ও চিংলেনসানা সিংয়ের (Chinglensana Singh) সঙ্গে ডিফেন্সে জুটি বেঁধেছিলেন লেফটব্যাক শুভাশীষ বোস (Subhasish Bose) এবং রাইটব্যাক রাহুল ভেকে (Rahul Bheke)। সামনে গ্লেন মার্টিন্স (Glan Martins) এবং সুরেশ সিং ওয়াংজামের (Suresh Singh Wangjam) মতো দুজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রেখে রক্ষণাত্মক ছকে খেলা শুরু করেছিল ভারত। সামনে ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ (Brandon Fernandes) খেলা তৈরি করার দায়িত্বে। সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) একক স্ট্রাইকার আর দুটো প্রান্তে আশিক কুরুনিয়ান (Ashique Kuruniyan) আর মানবীর (Manvir Singh)।

সারা খেলায় উড়িয়ে উড়িয়ে বিরক্তিকর ফুটবল দেখে মনে হচ্ছিলো ভারত যেন ওমান বা কাতারের সাথে খেলছে। মাঝ মাঠে বল ধরে খেলার কেউ ছিল না। গ্লেন বা সুরেশ তাদের রক্ষণাত্মক ভূমিকায় আজকেও অসাধারণ খেলেছেন। কিন্তু তাঁরা কেউই ব্রেন্ডনকে সাহায্য করতে পারেননি। খেলা শুরুর ২ মিনিটের মাথায় মানবীরকে একটা সুন্দর বল বাড়ানো ছাড়া ব্রেন্ডনকে খালি কর্নার নিতেই দেখা গেছে। ছেত্রী, মানবীররা সারা ম্যাচে খালি বল তাড়া করে গেলেন। এর সাথে বলতে হয় নীচ থেকে শুভাশীষ বা সন্দেশদের নিম্নমানের বল ডিস্ট্রিবিউশন যা আধুনিক ফুটবলে একেবারেই মানানসই নয় । শুভাশিসের বল ডিস্ট্রিবিউশন এতটাই খারাপ ছিল যে, বাঁদিক থেকে আশিক সেভাবে বলই পাননি। যেটুকু আক্রমণ হয়েছে তা মূলত ডান প্রান্তিক।

তবু খেলা শুরুর ২০ মিনিট অব্দি ভারত খানিকটা দাপটের সাথে খেলেছিল। ওই সময় একাধিক কর্নারও আদায় করে নিয়েছিল। যদিও কর্নার থেকে আগের দিনের মতো কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। এর মধ্যে ৯ মিনিটের মাথায় আফগান ডিফেন্সের ভুলে ছেত্রী গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর বাঁপায়ের দুর্বল শট গোলকীপারকে কোনো সমস্যায় ফেলতে পারেনি। প্রথমার্ধের একদম শেষে সুরেশ মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে খুব সুন্দর জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পাসটা সঠিক ভাবে মানবীরকে দিতে পারেন নি।

উল্টো দিকে প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিট দাপিয়ে খেলে গেলো আফগানিস্তান। গোল করার পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও বেশ কিছু অংশিক সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিলো। ৩৩ মিনিটে এমনই একটা প্রতিআক্রমণকে আটকাতে গিয়ে বাধ্য হয়ে সানা ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন।

দ্বিতীয়ার্ধে আশা করা গিয়েছিলো খেলার দখল নিতে কিছু পরিবর্তন আনবেন স্টিমাচ। কিন্তু কোনো পরিবর্তন হয় নি। ফলস্বরূপ ভারতের খেলারও কোনো পরিবর্তন হয় নি। উল্টে ৫৭ মিনিটে বক্স এর বাইরে আফগান ফরোয়ার্ডের জোরালো শট সোজা গোলকীপারের হাতে যায়। সামান্য এদিক ওদিক হলে গুরপ্রীতের কিছু করার ছিল না। এরপর ৬৬ মিনিটে ওমিদ (Omid Popalzay) শুভাশিসকে কাটিয়ে নিয়েও বক্সের ঠিক বাইরে থেকে গোলে শট রাখতে পারেননি।

৬২ মিনিটে আশ্চর্যজনক ভাবে কোচ আপুইয়াকে (Apuia) নামিয়ে ব্রেন্ডনকে বসিয়ে দেন। এরপর আপুইয়াকে পেছনে রেখে গ্লেন আর সুরেশ একটু সামনে থেকে খেলতে থাকে। আপুইয়া নেমেই মাঝমাঠে বল ধরে খেলা শুরু করলেন। ফলে বল ডিস্ট্রিবিউশনের একটু হলেও উন্নতি হলো যেটা সারা খেলায় দেখা যায় নি। কিন্তু সমস্যা হলো ব্রেন্ডন না থাকায় খেলা তৈরি করার কেউ আর মাঠে ছিল না। সাহাল বা থাপার মতো আক্রমণনাত্মক খেলোয়াড়কে সুরেশ বা গ্লেনের জায়গায় নামানোর সাহস দেখতে পারলে হয়তো এই সমস্যা হতো না। তবে আশ্চর্যের এখানে শেষ ছিল না। ৭২ মিনিটে ছেত্রীকে তুলে লিস্টনকে নামালেন কোচ। সুনীল ছেত্রীর শরীরী ভাষা দেখে পরিষ্কার মনে হলো তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন।

এরপর ৭৫ মিনিটে আফগান গোলকিপার আজিজি (Azizi) আশিক এর বাঁদিক থেকে করা নির্বিষ ক্রস ধরতে গিয়ে নিজের গোলে ঢুকিয়ে ভারতকে একটা গোল উপহার দিলেন। যদিও ৮২ মিনিটেই আফগানিস্তান এই গোলটি পরিশোধ করে। রাহুল ভেকের দুর্বল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে নূর হুসিন ( Noor Husin ) বাঁদিক থেকে বল নিয়ে দেন জামানিক (zamani)। অনবদ্য শটে গোল করে যান জামানি।

এরপর খেলার একদম শেষ মুহূর্তে বাঁদিক থেকে শুভাশিসের সেন্টারে হেড দেওয়ার দারুন সুযোগ এসেছিল মানবীরের কাছে। কিন্তু তিনি হেড গোলে রাখতে পারেননি। ১-১ স্কোরলাইনেই খেলা শেষ হয়। খেলার বিচারে সেটাই সম্ভবত সঠিক ফলাফল।

ভারত ১টা জয় , ৪টে ড্র এবং ৩টি হার দিয়ে ৩ নম্বরে শেষ করলো বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের টুর্নামেন্টে। কিন্তু এই খেলার পর প্রশ্ন উঠতে বাধ্য এত সময় পেয়েও স্টিম্যাচ কি খেলার কোনও উন্নতি করতে পেরেছেন? আফগানিস্তানের সাথে খেলাতেও যদি জেতার জন্য না খেলতে পারা যায় তাহলে ভারত কি সত্যিই উন্নতি করতে করতে পেরেছে? প্রশ্নটা যতটা না খেলোয়াড়দের খেলা নিয়ে তার চেয়েও বেশি কোচের অকারণ রক্ষণাত্মক খেলার প্রবণতার ওপর। আশা করা যায় ফেডারেশনের কর্তাব্যক্তিরা কোচের পারফরম্যান্সও খুঁটিয়ে বিচার করছেন।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233