রোমান সাম্রাজ্য না ব্রিটিশ সাম্রাজ্য – ইউরোপের দখল কার? মহারণের অপেক্ষায় ওয়েম্বলি

Share

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp

[fblike]

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের মহারণের আবেগের মাঝে খানিকটা আবছা হয়ে গেছে ইউরো ২০২০-এর ফাইনাল। ইতালি (Italy national football team) এবং ইংল্যান্ডের (England national football team) এই ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে কিন্তু আবেগ কম কিছু না, কারণ দীর্ঘ ৫৫ বছর পর কোনো মেজর ফাইনাল খেলতে চলেছে ইংল্যান্ড। আসুন, দুই দলের শক্তি এবং দুর্বলতা দেখে নেওয়া যাক।

ইংল্যান্ড (England)

শক্তি:

১. দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা: ডিফেন্সে রিও ফার্ডিন্যান্ড (Rio Ferdinand), জন টেরি (John Terry), মাঝমাঠে স্টিভেন জেরার্ড (Steven Gerrard), ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড (Frank Lampard), আর সামনে তাদের সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার ওয়েন রুনি (Wayne Rooney) থাকা সত্ত্বেও যারা কোনো ফাইনাল অব্দি যেতে পারেনি আজ হঠাৎ লিডস ইউনাইটেডের ফিলিপস (Kalvin Phillips), ওয়েস্ট হ্যামের রাইস (Declan Rice) এবং এস্টোন ভিলার গ্রিলিশদের (Jack Grealish) নিয়ে তারা ইউরো কাপ জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে! কোন মূল মন্ত্রে আজ এই ফাইনাল খেলছে তারা? মূলত ১৯৯০-২০০০ সালের সময় ক্লাব ফুটবলের রাইভালরির জন্যে জাতীয় দলে প্রায়ই ইগোর লড়াই লেগেই থাকতো খেলোয়াড়দের। আজ কিন্তু ক্লাব ফুটবল ভুলে দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ই ৫৫ বছর পর ফাইনালে উঠিয়েছে তাদের দেশকে, আর ঘরের মাঠ ওয়েম্বলী স্টেডিয়ামে (Wembley Stadium) তারাই হয়তো সামান্য হলেও ফেভারিট।

২. গতির ফুলঝুরি: ইংল্যান্ড বা তাদের ঘরোয়া লিগে প্রায়শই লং বলে খেলা হলেও এখন জাতীয় দলে উইং-প্লেতে বিশেষ জোর দিচ্ছেন গ্যারেথ সাউঠগেট (Gareth Southgate)। দুই প্রান্তে রাহিম স্টার্লিং (Raheem Sterling) এবং বুকায়ও সাকা (Bukayo Saka) থাকার ফলে গতির অভাব নেই এই দলে। এমনকি দুই প্রান্ত দিয়ে কাইল ওয়াকার (Kyle Walker) এবং লুক শাও (Luke Shaw) যখন ওভারল্যাপ করেন তখন কাকে ছেড়ে কাকে মার্ক করা উচিত, তা গুলিয়ে ফেলতে বাধ্য হন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররা।

৩. নক-আউটের হ্যারি কেন: গ্রুপ পর্বে সহজ সুযোগ নষ্ট করার ফলে সমালোচিত হয়েছিলেন হ্যারি কেন (Harry Kane)। কিন্তু রাউন্ড অফ ১৬ থেকে নিজের চেনা ছন্দ ফিরে পেয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। নক আউটের ৩ টি ম্যাচে ৪ গোল করে ফেলেছেন তিনি, তাই গোটা দেশের নজর কিন্তু মূলত তার দিকেই থাকবে।

৪. দুর্ভেদ্য ডিফেন্স: ইংল্যান্ড ইউরোর ইতিহাসে প্রথম দল যারা একটি টুর্নামেন্টে প্রথম ৫ ম্যাচ ক্লিনশিট রাখে। সেমি ফাইনালে ফ্রিকিক থেকে প্রথম গোল খায় তারা, তবে এখনো কিন্তু “ওপেন প্লে” থেকে একটিও গোল খায়নি তারা। ঠিক এই কারণেই ইনসিগ্নে, কিয়েসা দের কাজ কিন্তু কঠিন হতে চলেছে।

দুর্বলতা:

১. স্টার্লিং-নির্ভরতা: রাহিম স্টার্লিং এই ইউরোতে ইংল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড়। কিন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে সেরা খেলোয়াড় ফর্মে না থাকলে গোটা দলকে ভুগতে হয়, তবে কেনের ফর্মে ফিরে যাওয়ায় খানিকটা চাপমুক্ত থাকবেন সাউথগেট।

২. অনভিজ্ঞ মাঝমাঠ: যতই ফিলিপস, রাইসরা ভালো খেলুক, বড়ো মঞ্চে যে অভিজ্ঞতাকে বেশি প্রাধান্য দিতে হয় সেটা হয়তো জানেন সাউথগেট। ইতালির খানিকটা বেশি অভিজ্ঞ ভেরাত্তি, জর্জিনহোদের সামনে মাঝমাঠের লড়াইয়ে হেরে গেলে জয় তোলা কঠিন হবে ইংল্যান্ডের।

৩. গোল-তৈরি করা: ইতালির তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে ইংল্যান্ড, ইংল্যান্ড প্রতি নব্বই মিনিটে অনেক কম গোল করার মতো সুযোগ তৈরি করে।

ইতালি

শক্তি:

১. ইনসাইড উইঙ্গার: ইনসাইড উইঙ্গার তাদের বলে যারা দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ করতে করতে কাট করে ঢুকে বক্সের আসে পাশে চলে আসে, যেখান থেকে বাঁকানো শট নেওয়া খুব একটা কঠিন নয়। লোরেঞ্জো ইনসিগ্নে (Lorenzo Insigne) এবং ফেদেরিকো কিয়েসা (Federico Chiesa) দুজনেই বোধয় এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ইনসাইড উইঙ্গার, এবং এঁরা দুজনেই ইউরোতে তাদের বিষাক্ত শটের ঝলকানি দিয়ে দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের মতো দল যারা ডিফেন্স লাইনকে ওপরে নিয়ে যায়, তাদের বিরুদ্ধে ইনসাইড উইঙ্গারদের কাজ খানিকটা হলেও সহজ হয়ে যায়।

২. গোল-তৈরি করা: ইউরো ২০২০-তে সব থেকে বেশি গোল করার সুযোগ তৈরি করেছে স্পেন (১১১) তার পরেই ইতালি (১০৮)। এই নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে ইংল্যান্ড (মাত্র ৫৮)।

৩. ডিফেন্সের অভিজ্ঞতা: কিয়েল্লিনি-বনুচ্চি (Giorgio Chiellini-Leonardo Bonucci) সমৃদ্ধ ডিফেন্স ক্রমশই দুর্ভেদ্য হয়ে উঠছে ইতালির। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে পেনাল্টি থেকে গোল হজম করে তারা, আর স্পেনের বিরুদ্ধে খানিকটা আত্মতুষ্ট হয়ে। তবে ফাইনালে যে আলাদা চেহারা নিয়ে নামবেন তারা সেটা হয়তো বলার প্রয়োজন নেই।

৪. মাঝমাঠের পাসার: এই ইউরোর অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার জর্জিনহো (Jorginho)। তার পাশে অভিজ্ঞ মার্কো ভেরাত্তি (Marco Veratti) (পি এস জি) এবং তরুণ নিকো বারেলা (ইন্টার মিলান) এক প্রকারের গাঁট হয়ে দাঁড়ান বিপক্ষের কাছে। তাদের ম্যাচ রিডিং যেরকম, ঠিক সেরকম পাসিং এবং ওয়ার্ক রেট। বেঞ্চে থাকা ম্যানুয়েল লোকাটেলি (সাসুয়ালো) এবং মাতেও পেসিনারাও (আটলান্টা) গোলের মধ্যে আছেন, তো নিসসন্দেহে মাঝমাঠের দখল নেওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে ইতালি।

দুর্বলতা:

১. ফাইনালের আয়োজক: এটা ইতালির ঠিক “দুর্বলতা” না হলেও এই কারণে খেলা শুরু হওয়ার আগে খাতায় কলমে এগিয়ে থাকবে ইংল্যান্ড, কারণ ফাইনাল খেলা হচ্ছে লন্ডনের ওয়েম্বলী স্টেডিয়ামে, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে অপরাজিত থ্রি লাইন্স। এটা তাদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে নাকি নার্ভাস করে বিপক্ষকে এগিয়ে দেবে, সেটার উত্তর সময়ই দেবে।

২. ইম্মবিলের অফ ফর্ম: আশানুরূপ ভাবে খেলতে ব্যর্থ ইতালির স্ট্রাইকার সিরো ইম্মোবিলে (Ciro Immobile)। দুই প্রান্তে ইনসিগ্নে ও কিয়েসা (এবং বারার্ডি) না থাকলে প্রচন্ড ভুগতে হতে পারতো ইতালিকে। তবে গোল করার পক্ষে তাদের প্লাস পয়েন্ট – মাঝমাঠের খেলোয়াড়রাও গোলের মধ্যে আছে, যেমন পেসিনা (Matteo Pessina), বারেলা (Nicolò Barella)এবং লোকাটেলি (Manuel Locatelli)। এখনো অব্দি ইউরো ২০২০-তে মাত্র ২ টি গোল করেছেন লজিওর ইম্মোবিলে।

৩. আত্মতুষ্টি: টানা ৩৩ ম্যাচ অপরাজিত ইতালি, তাই তাদের ঘরে যে আত্মতুষ্টি দানা বাঁধতে পারে সেটা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, নকআউট রাউন্ডে এখনো ক্লিন শিট রাখতে পারেনি তারা, এবং গোল করার পরেই গোল খাওয়ার অভ্যেস তৈরি হয়ে গেছে তাদের। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ এগিয়ে ১১৫ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে বাচ্চাসুলভ ভুলে গোল খায় তারা, বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ২-০ এগিয়ে বক্সের মধ্যে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেয় তারা, যেই পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান রোমেলু লুকাকু এবং সেমি ফাইনালে খেলার ৮০ মিনিটের মাথায় আত্মতুষ্টির বশেই স্পেনের বিরুদ্ধে গোল খেয়ে ১-০ গোলের লিড হাতছাড়া করে ইতালি।

League Table

PosClubPWDLFAGDPts
1Hyderabad FC129122471728
2Mumbai City FC1183032112127
3ATK Mohun Bagan127231712523
4Kerala Blasters FC117131914522
5FC Goa126152016419
6Odisha FC116141515019
7Chennaiyin FC114252123-214
8East Bengal114071320-712
9Bengaluru FC12318817-910
10Jamshedpur FC11128819-115
11NorthEast United FC1210111033-233

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.